প্রায় ৪০ কাঠা জমিতে আমনের চাষ করেছেন রতন মিয়া। ধানের চারা রোপণের পর পরিচর্যায় মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তবে চলতি মৌসুমে জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় খরচ বেড়েছে। সম্পূর্ণ জমি চাষাবাদে তার খরচ হবে প্রায় ৭০ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে চাষাবাদের খরচ মিটিয়ে ২০ হাজার টাকা আয়ের আশা তার।
জমিতে সেচ খরচ কম হওয়ায় আমন চাষে কৃষকের আগ্রহ বেশি। জেলার হাওর বিস্তৃত চার উপজেলা বর্ষার পানিতে ডুবে থাকায় সীমান্তবর্তী দুর্গাপুর, সদর, পূর্বধলাসহ ছয়টি উপজেলায় আমনের চাষ হয় সবচেয়ে বেশি। পাহাড়ি ও উঁচু জমিগুলোতে আমন চাষ করেই সারা বছরের খরচ মেটায় কৃষকরা।
স্বল্প খরচের আশায় আমন চাষ করলেও এবার বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম বাড়ায় প্রভাব পড়েছে চাষাবাদে কৃষকরা বলছেন, চলতি বছর কাঠা প্রতি প্রায় খরচ বেড়েছে ৫শ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। শ্রমিকের মজুরি আর ফসল ঘরে তুলতে গুনতে হবে আরো বাড়তি অর্থ। তবে এখন পর্যন্ত পাহাড়ি ঢল কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় কিছুটা স্বস্তি রয়েছে কৃষকের মাঝে।
মাঠগুলোতে ব্রি-৭৫, ব্রি-৮৭, বিনাধান ১৭, স্বর্ণা, রঞ্জিতসহ উচ্চ ফলনশীল ধান আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। প্রায় শেষ চারা রোপণ। চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় এক লাখ ৩৫ হাজার ১৪০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই থেকে চাল উৎপাদন হবে প্রায় ৪ লাখ ১৩ হাজার ৪৫৭ মেট্রিক টন। যার বাজার মূল্য ১৮শ কোটি টাকা।
কৃষি বিভাগ বলছে, স্বল্প সময়ের এই ফসল চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে যেন এ ফসল ঘরে তোলার পর জমিগুলোতে সরিষাসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করতে পারে।
আগস্ট মাসের মধ্যে বেশিরভাগ জায়গায় ধান রোপন করা শেষ হবে। নতুন রোপা আমনের জাত ব্রি ধান- ৭১, ব্রি ধান- ৭৫, ব্রি ধান- ৮৭ এবং বিনাধান ১৭ এই উচ্চফলনশীল জাতগুলো চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে বলে জানালেন নেত্রকোণা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামান।
নেত্রকোণায় সবচেয়ে বেশি আবাদ হয় রোপা আমনের। গত বছর জেলায় ১ লাখ ৩৪ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়। যা থেকে উৎপাদিত ৩ লাখ ৯০ হাজার ৫২২ মেট্রিক টন চাল বাজারে বিক্রি হয় ১ হাজার ৭২০ কোটি টাকায়।