জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি উপজেলার মাঠে ছড়িয়ে ছিটিয়ে চাষ হচ্ছে কচুর লতি। দুই মৌসুমে কচুর লতি চাষ হয় ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি এবং এপ্রিল থেকে মে মাস পর্যন্ত। চাষ করা হয় চারা বা কাণ্ড রোপণের মাধ্যমে। রোপণের এক থেকে তিন মাসের মধ্যে কচু উৎপাদন শুরু হয়। কচু গাছের গোড়া থেকে প্রায় এক থেকে দেড়ফুট লম্বা লতি বের হলে তা কেটে বাজারজাত করা হয়।
জয়পুরহাটের কৃষকদের উদ্ভাবিত লতিরাজ কচুর জাত জনপ্রিয়তা পেলেও ধীরে ধীরে সনাতনী এ জাতের ফলন কমতে থাকে। কৃষি উপকরণের মূল্য বৃদ্ধি, বারী জাতের উদ্ভাবন, কিছু ক্ষেত্রে লোকসানসহ নানা কারণে আগের তুলনায় আবাদ কমেছে লতির।
বিদেশে রপ্তানি না হওয়াতে দাম কম পান বলে জানালেন কৃষকরা। যার কারণে লতির উৎপাদন কমিয়ে দিয়েছেন তারা। অতিরিক্ত খরার জন্য লতির ফলন এবার কম হয়েছে। এছাড়া সার এবং ওষুধের দাম বেড়ে যাওয়াতে লাভবান হতে পারছেন না কৃষকরা।
জয়পুরহাটের পাঁচ বিবির কৃষি কর্মকর্তা লুৎফর রহমান বলেন,'লতি কচুর প্রসেসিং কোন সেন্টার নেই। যদি আধুনিক লতি কচুর প্রসেসিং কোন সেন্টার থাকতো তাহলে উদ্যোক্তারা প্রসেসিং করে সরাসরি তা বিদেশে রপ্তানি করতে পারতো।'
ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় কচুর লতি যায় জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থেকে। কিছু ব্যবসায়ী ঢাকা থেকে প্রক্রিয়াজাত করে পাঠান যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুরসহ মধ্যাপ্রচ্যের দেশগুলোতে। তবে রপ্তানি আগের তুলনায় অনেকটাই কম বলে জানায় ব্যবসায়ীরা। এদিকে, জয়পুরহাটে একটি উন্নতমানের প্রক্রিয়া কেন্দ্র স্থাপনের দাবি স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের।
জয়পুরহাট কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, গত অর্থবছরে জয়পুরহাট থেকে উৎপাদিত এক হাজার তিন শত টন কচুর লতি ঢাকায় এবং বিদেশে রপ্তানি করা হয়।
জয়পুরহাটের লতিরাজ কচুর খ্যাতি দেশজুড়ে। শুধু দেশে নয়, দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশেও এই লতি রপ্তানি হতো বিপুল পরিমান। তবে গত কয়েক বছর ধরে রপ্তানির হারটি আস্তে আস্তে কমতে শুরু করেছে। এলাকা বাসীর দাবি উন্নতজাত এবং বাজার ব্যবস্থাপনা উন্নত করা গেলে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।