কৃষি , গ্রামীণ কৃষি
দেশে এখন
0

বৃষ্টিতে হাসি ফুটেছে রাজশাহীর কৃষকদের মুখে

ক'দিনের টানা বৃষ্টিতে স্বস্তি ফিরেছে রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলে। মৌসুমের শুরুতেই শত মিলিমিটারের বৃষ্টি আমনের বীজতলা তৈরিতে খরচ কমিয়েছে চাষিদের। বৃষ্টির আর্শীবাদে আমনের জমি প্রস্তুত করছে কৃষক। আর তাতে বিঘায় সেচ খরচ কমেছে আড়াই থেকে তিনশত টাকা। বরেন্দ্র অঞ্চল জুড়ে যার পরিমাণ প্রায় ১৫ থেকে ১৮ কোটি টাকা। কৃষি বিভাগ বলছে, বৃষ্টির কারণে আমনের আগাম রোপণ এবং রবি শস্য উৎপাদনে এগিয়ে রাখবে কৃষককে।

বৃষ্টির পানি কৃষিকে সহজ করে দিয়েছে আমন ধানের বীজতলা তৈরির কাজে। বরেন্দ্র অঞ্চলে ডানহাল-লাঙ্গি, উচাডাঙ্গাসহ উঁচু বরেন্দ্রের গ্রামে গ্রামে গৃহস্থরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।

এতজন কৃষক বলেন, 'সেচের পানি আর আকাশের পানির মধ্যে আকাশ-পাতাল তফাৎ আছে। বৃষ্টির পানিতে জায়গা ঠাণ্ডা হয়, এতে আমাদের বীজতলা করতে সুবিধা হয়। আমরা ৪, ৫ বা ৬ দিন পর একটা করে চাষ দেই।'

কয়েকমাস আগেও সেচের পানিতে চৈতা আর বোরো'র আবাদ ঘরে তুলেছে কৃষক। তাতে অনাবৃষ্টিতে তিন মাসে বিঘায় খরচ হয়েছে অন্তত ৫ হাজার টাকা। মাঝ আষাঢ়েও বৃষ্টি না পাওয়ায়, এবারও সেচ চিন্তায় ভাজ ছিল কৃষকের কপালে। তবে গেল ১২ আষাঢ় থেকে বৃষ্টিতে স্বস্তি ফেরে প্রায় ৩০ হাজার আমন আবাদির।

খেতে জমা বৃষ্টির পানিতে জমির আগাছা কেটে রাখা ধানের তোড় পচাতে চাষের কাজ শুরু করেছে কৃষক। এতে সেচের পানির প্রয়োজন না হওয়ায় বিঘায় কৃষকের সাশ্রয় ২৫১০ থেকে ৩০০ টাকা। আর আমনের আবাদে প্রস্তুতকৃত ৬ লাখ ২৬ হাজার ৭৭৫ বিঘা জমিতে সাশ্রয় প্রায় ১৫ থেকে ১৮ কোটি টাকা।

আমন চাষে সাশ্রয়ে জমির কাদাজলের হাসিতে সুর ওঠে কৃষাণীর কণ্ঠে। বৃষ্টি সুবিধায় বরেন্দ্রর চৈতন্যপুর গ্রামের মতো পূর্বেই প্রস্তুত করা ধান বীজ দিয়ে অনেক কৃষক শুরু করেছে আমনের রোপণ। যা লক্ষ্যমাত্রার প্রায় পাঁচ শতাংশ। এতে ধানের পরে রবিশস্য সরিষা, টমেটো বা আলুর চাষে এগিয়ে রাখবে তাদের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, বৃষ্টিতে কৃষকের অপেক্ষার অবসানে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবেন তারা। ফলে রবি শস্যেও লাভবান হবার সম্ভাবনা থাকবে কৃষকের।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, 'সারাদেশে যেখানে বাৎসরিক বৃষ্টিপাত হয় ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৩০০ মিলিমিটার, সেখানে রাজশাহী জেলায় ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ২০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টিপাতের পর আমাদের বীজতলা রেডি আছে, সাথে রোপা আমন আবাদ শুরু করা হয়েছে। এই মৌসুম মাত্র শুরু হলো। আগস্টের প্রায় ১৫ তারিখ পর্যন্ত রোপা আম আবাদ চলবে। আশা করি আমাদের যে লক্ষ্যমাত্রা আছে সেটা আমরা অর্জন করতে পারবো।'

রাজশাহীতে গেলো এক সপ্তাহের বৃষ্টিতে আমনের পাশাপাশি মাঠে থাকা আউশের উৎপাদনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।

এসএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর