ইসরাইলি বর্বরতা: দেশজুড়ে বিক্ষোভ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন

গাজায় ইসরাইলের হামলার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন | Ekhon Tv
0

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলের বর্বর ও নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ, মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছে শিক্ষার্থী, বিভিন্ন পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বন্ধ ছিলো ক্লাস-পরীক্ষা। নিপীড়নকারীদের কঠোর বার্তা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় রাজনৈতিক দলগুলো।

'ফ্রী ফ্রী প্যালেস্টাইন' শ্লোগানে শ্লোগানে সোচ্চার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশেপাশের এলাকা। ফিলিস্তিনে ইসরাইলি তাণ্ডবের প্রতিবাদে গ্লোবাল স্ট্রাইকের অংশ হলো বাংলাদেশও। ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে রাস্তায় নামলো প্রতিবাদী কণ্ঠ নিয়ে।

রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আগুন ঝরা বক্তব্যে ইসরাইলের নৃশংস গণহত্যার চিত্র তুলে ধরেন তারা। হাতে স্টপ জেনোসাইডের প্লাকার্ড, কণ্ঠে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সহমর্মীতা, চোখে ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতি তীব্র ঘৃণা।

বিক্ষোভকারীদের একজন বলেন, ‘যতদিন না ফিলিস্তিন মুক্ত হয়, আমরা মাঠে থাকবো ইনশাআল্লাহ।’

প্রতিবাদ হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারেও। সমালোচনা করেন ওআইসি, আরবলীগসহ মুসলিম বিশ্বের নেতাদের। তাদের অক্ষমতা ও নিশ্চুপ আচরণেই যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইল গণহত্যার সাহস দেখিয়েছে বলে অভিযোগ তাদের। অন্তর্বর্তী সরকারকে ইসরাইলের গণহত্যার বিপক্ষে সুস্পষ্ট বার্তা প্রদানের আহ্বান জানান বিক্ষোভকারীরা।

আরেকজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের প্রতিটি মুসলিম দেশেরই এই বিষয়ে জোরালো ভূমিকা রাখা উচিত।’

কেবল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে নর্থ সাউথ, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। এসময় ফিলিস্তিনের দীর্ঘ পতাকা নিয়ে তারা র‍্যালি করেন বিক্ষোভকারীরা।

বায়তুল মোকাররমে যোহরের নামাজের শেষে বের হয় সবচেয়ে বড় মিছিল। সেখানে ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যা বন্ধে স্লোগান উঠে। বলা হয়, ইসরায়েলি পণ্য বর্জণ করতে হবে।

বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আজ সেখানে কোন হাসপাতাল চালু নেই। এটা আমাদের আরো আগেই করা উচিত ছিল। যতই বড় শক্তি হোক না কেন, মানুষের শক্ত অবস্থান এই গণহত্যা থামাতে পারত।’

ইসরাইলি বাহিনীর কর্তৃক গাজায় নির্বিচারে মুসলমানদের গণহত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারীরা। বিক্ষোভ মিছিল থেকে শিক্ষার্থীরা বলেন, গাজার মুসলমানদের পাশে দাঁড়ানো বিশ্বের সকল মুসলমানদের নৈতিক অধিকার।

এদিকে, রাজধানীর অন্যান্য স্থানের মত উত্তরার মানুষও ইসরায়েলিদের বিরদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। একাত্ত্বতা প্রকাশ করে মিছিল করে রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেখানে অংশ নেয় শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেনী পেশার মানুষ। এতে নারীও শিশুদের অংশগ্রহনও ছিল চোখে পড়ার মত।

গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামীর বিক্ষোভ মিছিল করে, রাজধানীর প্রধান সড়ক গুলোতে। এসময় তার আন্তর্জাতিক সংগঠন নিরব ভুমিকা থেকে বের হয়ে গণহত্যা বন্ধে কাজ করার দাবি জানায়।

বাংলাদেশ লেবার পার্টির পক্ষ থেকে গণহত্যা অবিলম্বে বন্ধ করার জন্য সমাবেশ করে বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেইটে। একই দাবিতে শাহাবাগে মানব বন্ধন করে ন্যাশনাল সিটিজেন পার্টি।

বিকেলে রাজধানীর ভাটারায় আমেরিকান অ্যাম্বাসির সামনে বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমালোচনা করা হয়। তারা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচার এবং সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি করেন।

এসএইচ