মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালে সীমান্ত রাজ্য রাখাইন থেকে লাখো রোহিঙ্গার ঢল নামে কক্সবাজারে। উখিয়ায় আগে থেকে অবস্থান করা চার লাখের সঙ্গে নতুন করে যুক্ত হয় আরও আট লাখ রোহিঙ্গা। উখিয়ার কুতুপালং পরিণত হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থী শিবিরে।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার রাজি হলেও আস্থার সংকট, কোভিড মহামারি কিংবা সামরিক জান্তার ক্ষমতা দখল, বারবার ধাক্কা খায় রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া। বছরখানেক ধরে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের যুদ্ধের কারণে নতুন করে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ শুরু হয়। সীমান্ত এলাকাগুলো বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দখলে গেলে নেপিদোর সঙ্গে ঢাকার আলোচনায়ও ভাটা পড়ে।
তবে সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সেদিন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস জানান, আগামী রোজার ঈদে রোহিঙ্গারা তাদের নিজভূমে ঈদ করবে, এমনটাই আশা বাংলাদেশের।
এর প্রায় ২০ দিন পর ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর জোট বিমসটেক সম্মেলনে, শুক্রবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। সম্মেলনের এক ফাঁকে বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সঙ্কট বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ খলিলুর রহমান ও মিয়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী উ থান শিউ।
যেখানে মিয়ানমার জানায়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া আট লাখ রোহিঙ্গার তালিকা থেকে আংশিক যাচাই বাছাই করে এক লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য 'যোগ্য' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তালিকার বাকি রোহিঙ্গাদের যাচাই বাছাই কাজও দ্রুত সম্পন্ন করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে মিয়ানমার।
নিজ দেশে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠনোর উদ্যোগকে এই সরকারের বিরাট সফলতা হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর বলছে, মিয়ানমার প্রথমবারের মত প্রত্যাবাসন যোগ্য রোহিঙ্গাদের এমন তালিকা, সংকট সমাধানের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।