আগের মতো নৌপথে জৌলুস না থাকলেও ঈদে ফেরে হারানো ব্যস্ততা আর থাকে স্বল্প ও নিম্ন আয়ের মানুষের চাপ। সেই সাথে থাকে অসংখ্য অভিযোগ, অতিরিক্ত ভাড়া, অতিরিক্ত যাত্রী বহনসহ নানারকম ভোগান্তি।
রাজধানীর ব্যস্ততম গুলিস্তান জিরো পয়েন্টের সড়কের যানজট ঠেলে সদরঘাটে পৌঁছাতে হয় দক্ষিণাঞ্চলের লঞ্চ যাত্রীদের। দীর্ঘ এই পথে ভোগান্তি বাড়ায় হকার আর যত্রতত্র পার্কিং। ঈদের সময় সড়কের পরিস্থিতি হয়ে ওঠে আরও ভয়াবহ। সবাই ছোটে নারীর টানে।
প্রতিবছরের মতো এবারও ঈদে নৌপথে যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে লঞ্চ মালিক, বাস মালিক, বিআইডব্লিউটিএ, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ সকল অংশীদারদের সাথে বৈঠকে বসেন নৌ পরিবহন উপদেষ্টা। নির্দেশ দেন ১৫ রমজান থেকে রাজধানীর জিরো পয়েন্ট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত সড়ক হকারমুক্ত করতে এবং যত্রতত্র বাস পার্কিং বন্ধে ব্যবস্থা নিতে।
নৌপরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নৌচলাচলের ক্ষেত্রে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, সিদ্ধান্তগুলো ১৫ রমজান থেকে বাস্তবায়ন শুরু হবে। জিরো পয়েন্ট থেকে সদরঘাট পর্যন্ত রাস্তাটি উন্মুক্ত রাখতে হবে। বাস যাত্রাপথে যত্রতত্র দাঁড়িয়ে রাস্তা বন্ধ করতে পারবে না। আমি পুলিশকে অনুরোধ করেছি, তারা তিনটি জায়গায় র্যাকার নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবেন। প্রয়োজন হলে বাস উঠিয়ে নিয়ে যাবেন। গোলাপ শাহ মাজার থেকে সদরঘাট পর্যন্ত এমন একটা বিশৃঙ্খল অবস্থা হয়, কেউ ৩টার সময় রওনা হলেও ৭টার লঞ্চ ধরতে পারে না। একটা সভ্য দেশ, সভ্য শহরে এটা হয় না।’
যাত্রীদের অতিরিক্ত ভাড়ার অভিযোগ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান নির্ধারিত ভাড়াতে যাত্রী বহন করতে হবে অন্যথায় রুট পারমিট বাতিল করা হবে। যদিও নির্ধারিত ভাড়ার বিষয়টি ঠেলে দিলেন অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষের দিকে। উপদেষ্টা জানান, এতদিন লোকসানে লঞ্চ চালিয়েছে মালিকরা।
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'সর্টরুট যেটা, দিনের বেলা যারা চালাবেন তারা অলরেডি দরখাস্ত করতে হবে। কেউ ভাড়া বেশি নিবেন না। বলা হয়েছে, শুধু জরিমানা না, সেই লঞ্চের রুট পারমিট বাতিল করা হবে। আমি বলছি নির্ধারিত ভাড়াটা আজ থেকেই টানিয়ে দিবেন।'
এসময় উপদেষ্টা জানান, লঞ্চে যাত্রীদের অহেতুক হয়রানিমূলক তল্লাশি না করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ১৫ রমজান থেকে রাতে বাল্ক হেড ও স্পিডবোট চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
নৌ পরিবহন উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, 'যাত্রী সকলের নিরাপত্তার জন্য চেষ্টা করছি। আমি লঞ্চ মালিকদের অনুরোধ করেছি, তারা যেন নির্ধারিত স্পিডে চলাচল করে। বাল্ক হেড ও স্পিডবোট সবসময় নিষিদ্ধ, এখন তো চলবেই না।'
এসময় যাত্রী চাপে যদি দিনের বেলা কোনো লঞ্চ চলাচল করতে আগ্রহ প্রকাশ করে সেক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে বলেও জানান উপদেষ্টা।