গণঅভ্যুত্থানের ছয় মাস পর আজ (রোববার, ১৬ ফেব্রুয়ারি) এক ছাদের নিচে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে সরকারের মাঠ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
টিমের ক্যাপ্টেন হিসেবে নিজেকে তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা জানান, সরকার গঠনের ছয় মাসে অনেক ভুল-ভ্রান্তি হয়েছে। এখন থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
ডিসিদের উদ্দেশ্যে ড. ইউনূস জানান, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিকের সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেয়া সরকারের দায়িত্ব।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, 'সংখ্যালঘুদের রক্ষা করা মস্তবড় দায়িত্ব। কারণ এটার উপরই সারা দুনিয়া নজর রাখে আমারে উপর। আমরা সংখ্যালঘুদের সাথে কীভাবে ব্যবহার করছি এই বিষয়টির উপর। এটা ছোট ঘটনা সারা দুনিয়ায় বিশাল কিছু হয়ে যায়। এটা আমাদের দায়িত্ব, সরকারের দায়িত্ব-কর্তব্য সকল নাগরিকের সুরক্ষা রক্ষা করা। আমি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের তাদের কাছেও বলেছি, আপনারা সংখ্যালঘু হিসেবে আমাদের কাছে দাবি করেন না। দেশের নাগরিক হিসেবে দাবি করেন।'
আইনশৃঙ্খলা ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসকদের ভূমিকা রাখার নির্দেশ দেন তিনি।
ড. ইউনূস বলেন, 'আমার জেলার সবচেয়ে ভালো বাজার দর যাচাই করেছি বা যে জায়গায় অসুবিধা থাকে সেগুলো নিয়ে কাজ করেছি। নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় আমি উপরে আছি। কারও রক্তচক্ষুর কারণে, কারও ধমকের কারণে কোনো কাজ করার প্রয়োজন নেই, অন্তত এই সময়ের মধ্যে। বরং নিজের মতো করে দেশের জন্য যেটা করা দরকার সেটা আমি করবো।'
পাসপোর্ট পাওয়াকে নাগরিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ করে এর জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না বলে স্পষ্ট করে দেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, 'পাসপোর্ট তো আমার নাগরিক অধিকারের একটা অধিকার। আমি চোর না ডাকাত না কী, সেটা বিচারক বিচার করবে। কিন্তু আমাকে যে জন্মসনদ দিয়েছেন সেটাতে পুলিশ ভেরিফিকেশন করতে হয়নি, ন্যাশনাল আইডি কার্ড দিয়েছেন সেখানেও পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি। নাগরিক হিসেবে পেয়েছি। পাসপোর্টও এই দেশের নাগরিকের একটা পরিচয়পত্র। এটার জন্য কেন পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে। আমরা আইন করে দিয়েছি যে এটার জন্য কোনো পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগবে না।'
এবারের ডিসি সম্মেলনে ৩০টি কার্য অধিবেশন হবে। ইতোমধ্যে ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনাররা তাদের মোট ৩৫৪টি প্রস্তাব দিয়েছেন।