বর্তমানে বাজারে ডিমের হালি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। ব্রয়লার মুরগি ২০০ থেকে ২১০ টাকা, আর সোনালি মুরগি ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
গত সেপ্টেম্বরে ডিম ও মুরগির বাজার অস্থির হয়ে পড়ে। বাজার নিয়ন্ত্রণে ১৬ সেপ্টেম্বর ফার্মের মুরগির ডিমের ডাম ডজন ১৪২ টাকা, ব্রয়লার মুরগির ১৮০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়।
প্রতিদিন দেশে ৪ কোটি ডিমের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন হয় ৫ কোটি। এরপরও ডিমের দাম নিয়ে বিভিন্ন সময়েই বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। এজন্য পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন করপোরেট কোম্পানিগুলোকে দায়ী করে আসছে।
দেশের প্রান্তিক খামারিদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য দাম নিশ্চিতের পাশাপাশি করপোরেট সিন্ডিকেট বন্ধ করা সহ ১০ দফা দাবি জানিয়ে আসছে তারা। এসব দাবি পূরণ না হলে ১ জানুয়ারি থেকে খামারে ডিম ও মুরগির উৎপাদন বন্ধের হুঁশিয়ারিও দেয়া হয়েছিল।
সেই দাবির ধারাবাহিকতায় আজ (শনিবার, ৪ জানুয়ারি) সকালে পোল্ট্রি শিল্পের অস্থিরতা ও ১০ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন।
সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির সভাপতি আবারো অভিযোগ করেন, পোল্ট্রির বাজারে অস্থিরতার জন্য কর্পোরেট কোম্পানিগুলো দায়ী। ফিড ও ব্রিড কোম্পানির দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, বছরে কোম্পানিগুলো অতিরিক্ত ৬ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করে।
বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘আমরা মুরগীর বাচ্চা পাচ্ছি না। একটা মুরগীর বাচ্চার উৎপাদন খরচ ২৮ থেকে ৩০ টাকা। কিন্তু এখনো একটা লেয়ার মুরগীর বাচ্চা বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এ বিষয়গুলোকে সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত। আপনারা যদি বড় বড় করপোরেট গ্রুপের লাগাম টানতে ব্যর্থ হন এবং আর আমরা প্রান্তিক খামারিরা যদি মুখ ফিরিয়ে নেই, তাহলে আবার আপনাদের তাদের ওপর নির্ভর করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে সরকারের তরফ থেকেও পর্যাপ্ত সহযোগিতা না মেলার অভিযোগ করা হয়। এখনই লাগাম টানা না গেলে ভবিষ্যতে মুরগি ও ডিমের দাম ক্রেতাদের নাগালের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তাদের ।
সভাপতি সুমন হাওলাদার বলেন, ‘সরকারি উদোগে পোল্ট্রি, ফিড মিল এবং মুরগীর হ্যাচারি স্থাপন করতে হবে। আট বিভাগে আটটি ফিড মিল এবং আট হ্যাচারি করতে হবে। এছাড়া খামারিদের উৎপাদন বাড়ানোর জন্য সহায়তা করতে হবে। ভর্তুকি ও ঋণ ব্যবস্থা চালু করতে হবে। করপোরেট বিপরীতে প্রান্তিক খামারিদের জন্য আলাদা বাজার ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। যাতে তারা তাদের উৎপাদিত পণ্য সরাসরি বাজারে সরবরাহ করতে পারে।’
রমজানকে সামনে রেখে আগামী ১২ জানুয়ারি থেকে রাজধানীর ১০০টি পয়েন্টে পোল্ট্রি ও কৃষিজাত পণ্য বিক্রি করবে পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন। প্রাথমিকভাবে ২০ টি পয়েন্ট দিয়ে শুরু হবে এই কার্যক্রম।