সন্ধ্যা নামতেই দূর থেকে মনে হবে মাঠজুড়ে মিটিমিটি জ্বলছে জোনাকি। কাছে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি লাইট আর নিচে সবুজ ড্রাগন গাছ ও সাদা ফুলের হাতছানি। যেন আঁধার রাতে আলো আর সবুজ-সাদার মিলনমেলা।
শীতের সন্ধ্যায় ড্রাগন ক্ষেতে জ্বলছে ৩ শতাধিক বাতি। এসব বৈদ্যুতিক বাতির আলোক রশ্মিতে ড্রাগনের ফুল ফোটানোর স্বপ্ন দেখছেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। যশোরের চৌগাছার গোয়াতলী গ্রামের এই ড্রাগন চাষি জানান, ইউটিউব দেখে নিজের ১ বিঘা জমিতে কৃত্রিম আলোয় ড্রাগনের চাষ শুরু করেছেন তিনি। ক্ষেত পরিচর্যা, লাইটিংসহ এ মৌসুমে খরচ হয়েছে ২ লাখ টাকা। যেখানে থেকে ৯ লাখ টাকার ফল বিক্রির আশা ব্যবসায়ীর।
ড্রাগন ফল চাষী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘ইউটিউবের মাধ্যমে দেখালাম চীনে অফ সিজনে ওরা ফল চাষ করছে। যেহেতু ৬ মাস আমার এখানে খালি পড়ে থাকে, তাই শুধু লাইট লাগালেই আমি ফল চাষ করতে পারছি। এভাবে আমি লাইট লাগিয়ে ড্রাগন ফল চাষ শুরু করি।’
কৃষি বিভাগ বলছে, শীত মৌসুমে দিনের আলো ও তাপ কম থাকায় ড্রাগনের ফুল ফোটায় বাধাগ্রস্ত হয়। তাই কৃত্রিমভাবে দিনের আলো বাড়াতে সন্ধ্যার পর এবং ভোর রাতে গাছে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা আলো ও তাপ দিয়ে ড্রাগন চাষ একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন অনেকেই।
যশোর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক প্রতাপ মন্ডল বলেন, ‘আমরা আশাবাদী এই কৃত্রিম আলোর মাধ্যমে ফলন বাড়বে যার কারণে বাজারে ব্যাপক আকারে এই ফল পাওয়া যাবে। এই পদ্ধতিতে যে পরিমাণের ড্রাগন ফল উৎপাদন হয় তা থেকে প্রায় ১১৩ কোটি টাকা আমাদের অর্থনীতিতে যুক্ত হচ্ছে।’
ড্রাগন ক্ষেতের রাতের সৌন্দর্য দেখতেও আসছেন অনেকে। যা বাড়তি পাওয়া স্থানীয় দর্শনার্থীদের কাছে।
জেলায় এ বছর ৪৭০ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ হয়েছে। যা থেকে প্রায় সাড়ে ১১ হাজার টন ড্রাগন ফল উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে, যার মূল্যে প্রায় ১১৩ কোটি টাকা।