ঝিনাইদহের শিবনগর গ্রামের কৃষক সুরত আলী। শুরুতে মাত্র কয়েক শতক জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ করলেও ৬ বছরের ব্যবধানে এখন ২৫ বিঘা জমিতে চাষ করছেন।
ড্রাগন চাষি ও কৃষি উদ্যোক্তা সুরত আলী বলেন, 'এই এলাকায় একটা লোকও গরিব নাই বর্তমানে। আমার জমিতে যারা জন দেয় তাদেরও দুই বিঘা করে ড্রাগন। তারা সবাই ফ্ল্যাট বাড়ি করেছে।'
শুধু সুরত আলী নয়, চাহিদা আর ভাল দাম পাওয়ায় ড্রাগন চাষ করছেন অনেক চাষি। গেল মৌসুমে টনিক ব্যবহার গুজব ছড়ালে ধস নামে এই ফল কেনা-বেচায়। তাই চলতি মৌসুমে নিরাপদ ফল উৎপাদনে সচেতন কৃষকরা।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন জানান, যাদের জমি নাই তারা বাড়ির আঙিনা এবং ছাদের উপর ড্রাগন লাগিয়েছে।
ড্রাগন বিক্রেতাদের মধ্যে একজন জানান, ফলটা দেখতেও সুন্দর এবং মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতাও আছে। আর বেচা-কেনা ও ভালো হচ্ছে।
ড্রাগন চাষি ও কৃষি উদ্যোক্তা সুরত আলী। ছবি এখন টিভি
চাষিরা জানান, দেড় থেকে ২ লাখ টাকা খরচে ১ বিঘা জমিতে গাছ রোপণ করা যায়। এ থেকে ৫-৬ লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করা যায়। ভালো লাভ হওয়ায় ড্রাগন চাষে আগ্রহ বাড়ছে অনেকের।
এদিকে মহেশপুরের গৌরীনাথপুর গ্রামে গড়ে উঠেছে ড্রাগন ফলের পাইকারি বাজার। রাজধানী ঢাকা-চট্টগ্রামসহ সারাদেশের পাইকারদের আনাগোনায় মুখর থাকে ড্রাগনের অর্ধশতাধিক আড়ত। এখানে প্রতিদিন বেচাকেনা হয় ২ কোটি টাকার।
কৃষি বিভাগ বলছে, চাষিদের নিরাপদ ড্রাগন ফল উৎপাদনে মনোযোগী করতে মাঠে নেমেছেন কৃষি কর্মকর্তারা। দেয়া হচ্ছে তাদের দরকারি পরামর্শ।
ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ষষ্টি চন্দ্র রায় বলেন, 'ড্রাগন ফল চাষাবাদে সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন প্রদর্শনী স্থাপনসহ কারিগরি পরামর্শ আমরা প্রদান করছি। ড্রাগন চাষে আবাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।'
চলতি মৌসুমে ঝিনাইদহে ১ হাজার ২'শ হেক্টর জমিতে ড্রাগন চাষ হয়েছে। এখান থেকে ৩২ হাজার টন ফল উৎপাদন হবে। যার বাজারদর ৮শ ৫১ কোটি টাকা।