সংলাপে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, রাজনীতিবিদদের দৃষ্টিভঙ্গির বদল না হলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার কঠিন হবে। বিপ্লব পরবর্তী ঐক্য ধরে রাখতে ফ্যাসিজম লোপ করতে প্রয়োজনীয় সংস্কারের বিষয়টিও উঠে আসে আলোচনায়।
ঐক্য, সংস্কার আর নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আলোচনার মাঝেই এ নিয়ে ফোরাম ফর বাংলাদেশের সংলাপের দ্বিতীয় অধিবেশনে উপস্থিত হন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, ছাত্র প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ, অর্থনীতিবিদসহ নানা জন।
'ঐক্য কোন পথে' আর রক্তের ঋণ, ঐক্যের আকাঙ্ক্ষা' এমন শিরোনামে আলাদা আলোচনায় উঠে আসে কীভাবে এ সরকারের সময়ে নানা ধরনের অনৈক্য দেখা যাচ্ছে। বক্তারা বলেন, সংস্কার নিয়ে অনৈক্য থাকায় সার্বিক ঐক্যে কিছুটা আচর লেগেছে। ঐক্য ও সংস্কারের আগে মানুষকে আইনশৃঙ্খলা, বাজার ব্যবস্থাপনায় স্বস্তি দিতে হবে বলে মনে করেন তারা। এছাড়াও প্রশাসনেও নানা ধরনের ফ্যাসিজম আছে বলেই কাটছে না সংকট।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের ব্যাখ্যা বিবরণ নিয়ে নিজেদের মধ্যে বিবেদ সৃষ্টি না করে ভবিষ্যতের বাংলাদেশকে নিয়ে আমাদের স্বপ্নের জায়গায় ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে।’
শিক্ষাবিদ ড. সলিমুল্লাহ খান বলেন, ‘যেকোনো কারণে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ব্যাহত করা হয় তখন জনগণ অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নিজেদের সার্বভৌমত্ব জাহির করে।’
আলোকচিত্রী ও সাংবাদিক শহীদুল আলম বলেন, ‘আমাদের তো অনেক রাজনৈতিক দল এসেছে। এতগুলো রাজনৈতিক দলের যেকোনো একটা দল তাদের ইশতেহারের ১০ শতাংশ সত্যিকার অর্থে কাজে লাগাতো তার জীবনে গদি থেকে সরতে হতো না। সেটা তারা জীবনে করেনি।’
তাহলে আইনশৃঙ্খলায় কিছুটা অবনতি ও বাজার ব্যবস্থাপনায় সংকট উত্তরণের উপায় কি? ঐক্যের সংকট কীভাবে সমাধান করা যায় এমন প্রশ্নের ভিত্তিতে বক্তারা বলেন, সবাইকে ছাড় দেয়ার মানসিকতা থেকেই এগিয়ে আসতে। এর জন্য কিছু সংস্কার এখনই করে ফেলা দরকার, বাকিটা সময় নেয়া উচিত বলে মনে করেন তারা।
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ‘আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে দলগুলো জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। পারিবারিক বা ব্যক্তির কাছে দায়বদ্ধ থাকবে না।’
রাজনীতিবিদদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন না হলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার কঠিন বলে মনে করেন সংলাপে অংশ নেয়া বক্তারা। বলেন, মনোনয়ন বাণিজ্য গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে বড় সংকট। তাই তরুণদের মাধ্যমে একতাবদ্ধ হয়ে সংস্কার করা গেলে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব।
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘মনোনয়ন বাণিজ্য যখন হয় তখন রাজনীতি কিসে রূপান্তরর হয় যা ব্যবসায় রূপান্তর হয়ে যায়। কিন্তু রাজনীতি হওয়ার কথা জনগণের কল্যাণে।’
শুক্রবার সকাল থেকে শুরু হওয়া সংলাপে আরও তিনটি সেশন হবে শনিবার।