অচিরেই চিকিৎসক সংকট কাটিয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসা সেবা চান এলাকাবাসী ।
ষাটউর্ধ আছিয়া খাতুন এলাকায় যিনি আছিয়া খালা নামে পরিচিত। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও কর্ম এখনও পিছু ছাড়েনি এই আয়ার। চাকুরি শেষের পথে আর মাত্র ৭ মাস কর্মস্থলে সুযোগ থাকলেও কর্তব্য এখনও একটুও কমেনি।ডাক্তার বা অন্য কেউ না থাকলেও এই মানুষটাকে সার্বক্ষণিক পাওয়া যায় হরি শংকরপুর ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে । ১ জন চিকিৎসকসহ ৩ জন থাকার কথা থাকলেও বেশির ভাগ সময় কেন্দ্রটিতে আসলেই শুধু পাওয়া যায় আছিয়া খাতুনকে। নিজে ব্যথা বিশ শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগে জর্জরিত হলেও স্বাস্থ্য কেন্দ্রে তাকে হাসি মুখে পাওয়া যায়।
আছিয়া খাতুন বলেন, ‘আরেকজন আছে তার থানায় যেতে হয়। স্যাটেলাইট হাসপাতালে যেতে হয়। আমি তো আর দৌড়াতে পারি না।’
একই রকমের চিত্র পাওয়া যায় জেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দুরে অবস্থিত আবাইপুর ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে । এখানেও অফিস সহায়ক মনিরুল ইসলামকে পাওয়া যায়। ২০১২ সালের পর ডাক্তার নেই এখানে। যাও বা কাগজ কলমে কিছু দিনের জন্য ১ জনকে দিয়েছিলো, কিন্তু সে চিকিৎসকের সাথে তেমন কারোর সাক্ষাৎ মেলেনি।
একজন মেডিকেল অ্যাসিস্টেন্ট খাকলেও বেশিরভাগই অফিসে পাওয়া যায় না। রোগীরা আসলে তাদের সাথে কুশল বিনিময় করেন এই সদআলাপী মনিরুল ইসলাম। শারীরিক অসুস্থতার কথা শোনেন মনোযোগ দিয়ে রোগীদের দুঃখ-দুর্দশা দেখে নিজেও মাঝে মাঝে ছোট খাটো রোগের ওষুধ দেন। প্রতিদিন গড়ে প্রায় শতাধিক রোগী তাকেও সামলাতে হয়।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এখানে এমবিবিএস ডাক্তার নেই প্রায় ২-৩ বছরের মতো।’
আবাইপুর ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, হরি শংকরপুর ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, নেয়ামতপুর ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, কচুয়া উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ ৮টি উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রেই এমবিবিএস ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে। এছাড়াও জনবল কাঠামোর অভাবে প্রায় ১৫ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে প্রত্যন্ত অঞ্চল মহেশপুরের মান্দার বাড়িয়া ইউনিয়ন উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র।
এ বিষয়ে সমাধানের জন্য কাজ করার কথা জানালেন স্বাস্থ্য বিভাগের এই কর্মকর্তা ।
ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রায় ১৪ বছর যাবত নিয়োগ নেই। এই অবস্থায় আমাদের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসা সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে।’
স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, প্রতিটি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গড়ে প্রতিদিন সেবা নিতে আসে ১০০ থেকে ১১৫ জন মানুষ।