রাজধানীর সাথে সড়ক যোগাযোগ উন্নয়নের পর চাঙা হয় বরিশালের আবাসন খাত। ভবন নির্মাণে আগ্রহী হয়ে ওঠেন আবাসন ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ব্যক্তি পর্যায়ের জমির মালিকরা।
সব নিয়ম মেনে সিটি করপোরেশনে ভবনের নকশা অনুমোদনে নথি জমা দেয় তারা। কিন্তু প্রায় দুই বছর ধরে অজ্ঞাত কারণে নকশা অনুমোদন না দিয়ে করপোরেশনের গড়িমসি করার অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
বরিশাল নাগরিক অধিকার আন্দোলনের সদস্য সচিব প্রকৌশলী আবু সালেহ বলেন, ‘বরিশাল সিটি করপোরেশন নতুন ভবন অনুমোদনের ক্ষেত্রে প্রায় দুই বছর যাবত গড়িমসি করছে। সাবেক মেয়র সাদেক আব্দুল্লাহ এবং খোকনের সময়ে যেসব প্ল্যান জমা হয়েছে তার অধিকাংশ এখন অনুমোদন হয়নি।’
বিগত এই সময়ে শত শত ভবন নির্মাণে নকশা অনুমোদনের আবেদন জমা পড়ে। তবে অনুমোদন না পাওয়ায় এই খাতে আড়াই হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ পিছিয়েছে বলে জানান, বরিশাল ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক।
বরিশাল ডেভেলপারস অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মাহামুদ বেগ বলেন, ‘প্ল্যান যদি সময় সিটি করপোরেশন দিতো তাহলে বরিশালে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা বিনিয়োগ হতো। এই বিনিয়োগের কারণে এর সঙ্গে জড়িত সকল শ্রেণি উপকৃত হতো।’
একই সঙ্গে রড, সিমেন্ট, বালু, কাঠ, টাইলস, রং, বিদ্যুৎ ও স্যানিটারিসহ বিভিন্ন নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসায়ও নেমেছে ধস। কাজ হারিয়েছে অনেক নির্মাণ শ্রমিকরাও।
বরিশাল সিমেন্ট ও লৌহজাত দ্রব্য ব্যবসায়ী সমিতির সাধারন সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান হিরা বলেন, ‘ রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী, প্লাম্বার, সেনেটারি মেটেরিয়ালসের ব্যবসায়ী, টাইলস ও রঙের ব্যবসায়ীসহ আমরা সবাই মন্দার মধ্যে দিন পাড় করছি। এই খাতে আমাদের হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ আছে কিন্তু বিনিয়োগ অনুপাতে আমাদের কোনো রিটার্ন নেই।’
সিটি করপোরেশনের কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, অল্প সময়ের মধ্যেই ভবনের নকশা অনুমোদনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রেজাউল বারী বলেন, ‘আমরা মিটিং করব তারপর পর্যায়ক্রমের ছেড়ে দেয়া হবে। ১৯৯৬ বিধিমালা অনুযায়ী যদি প্ল্যানটা হলে তাহলে আমাদের সুবিধা হয়, তবে দেয়া গেছে বেশির ভাগ আবেদনই ১৯৯৬ সালের ইমারত আইন বিধিমালার মধ্যে নেই।’
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মো. রায়হান কাওছার বলেন, ‘ আইনজটিলতা বা অন্য কোনো কারণ কোনটার কারণে এতগুলো জমে ছিল তা আমি দেখিনি। এগুলো আমরা তাৎক্ষণিকভাবে যেটা আইনের মধ্যে থেকে অনুমোদন দেয়া সম্ভব হবে সেগুলো আমরা দিয়ে দেব।’
নতুন ভবন নির্মাণে নকশা অনুমোদনের জন্য বরিশাল সিটি করপোরেশনে এরই মধ্যে জমা পড়েছে নয়শ'র বেশি আবেদন। যা অনুমোদন দেয়া হলে সিটি করপোরেশনের আয় হতো কমপক্ষে দশ কোটি টাকা।