পানির ঢেউয়ের শব্দ আর সূর্যাস্তের সময় আকাশের লাল আভা পানিতে পড়তেই রক্তিম হয়ে উঠে চারপাশ। নয়নাভিরাম এই দৃশ্যের দেখা মেলে হাঁসাইকগাড়ী বিলে। নঁওগা সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ী ও শিকারপুর ইউনিয়ন নিয়ে গড়ে উঠেছে এই বিল। বিলের মাঝ দিয়ে গেছে আঁকাবাঁকা সড়ক। লাল শাপলা নজর কাড়ে দর্শনার্থীদের। স্থানীয়দের কাছে মিনি কক্সবাজার খ্যাত এই বিল ঘিরেই গড়ে উঠেছে কয়েকশ মানুষের কর্মসংস্থান।
প্রতিবছর ৬ মাস এ বিল পানিতে থাকে টইটুম্বুর। এই বিলে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে আসেন শতশত দর্শনার্থী। ছুটির দিনে এই সংখ্যা ছাড়ায় কয়েক হাজারে। জনপ্রিয়তার কারণে বিলটি পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার দাবি স্থানীয়দের।
বিলের পাশেই গড়ে উঠেছে ছোট ছোট খাবারের দোকান। পানিতে ঘুরে বেড়াতে রয়েছে ২০০ নৌকা। এ বিলকে কেন্দ্র করে নৌকার মাঝি ও ক্ষুদ্র দোকানি মিলে অন্তত ২৫০ জনের কর্মসংস্থান গড়ে উঠেছে।
এদিকে বিলের পাড়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে ২০ গ্রামের আড়াই হাজার মৎস্যজীবী। বিলের পানি কমে গেলে চাষাবাদ হয় ইরি-বোরো ধানও। এছাড়া উঁচু জমিতে চাষ হয় সরিষা ও আলুসহ বিভিন্ন রবিশস্য। বিল থেকে বছরে প্রায় ৮০ কোটি টাকার ফসল উৎপাদন করা হয়।
উপজেলা প্রশাসন বলছে, এটিকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ চলছে। আর কৃষিকে সমৃদ্ধ করতে উন্নত জাতের বীজ সরবরাহসহ সার্বিক পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ।
নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস.এম রবিন শীষ বলেন, ‘এই জায়গাটি দর্শকদের জন্য আনন্দদায়ক করার জন্য যা যা করার দরকার তা আমরা জেলা প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে করার ইচ্ছে পোষণ করছি।’
নওগাঁ সদর উপজেলা কৃষি অফিসের মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘সরিষা ও আলোর পাশাপাশি আরো কিছু রবিশস্য চাষ করা যায় কিনা সেজন্য আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। মৎস্য এবং কৃষি উভয় ক্ষেত্রে হাঁসাইকগাড়ী বিলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি।’
প্রায় ৩ হাজার ২শ হেক্টর আয়তনের এ বিলকে পর্যটন এলাকা হিসেবে গড়ে তোলা হলে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দূর হবে বেকারত্ব। এমন উদ্যোগ নিতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান সংশ্লিষ্টদের।