দেশে এখন
0

ভুতুড়ে ঋণ পরিশোধে কৃষকদের বিরুদ্ধে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের মামলা

পঞ্চগড়ের কিছু কৃষক কৃষিঋণ নিয়েছিলেন। পরে তারা জানতে পারেন এই ঋণের সাথে সোলার ইরিগেশন পাম্প প্রকল্পের কয়েক কোটি টাকার ভুতুড়ে ঋণ জুড়ে দেয়া হয়েছে। সেই ঋণ পরিশোধে কৃষকদের বিরুদ্ধে মামলা ও জমি নিলামের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। দুশ্চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটছে কৃষকদের।

বছরখানেক পাড় না হতেই অকেজো সৌরবিদ্যুৎচালিত সেচপাম্প। পাম্প অচল তারপরেও দিতে হবে ঋণের কিস্তি। সেচের বিনিময়ে মৌসুমে জনপ্রতি কৃষককে দিতে হবে ১৫০০ টাকা। যা দিয়ে শোধ হবে ব্যাংক ঋণ। এই ঘটনার শুরু পঞ্চগড় সদর ও বোদা উপজেলায় প্রায় বছর দশেক আগে।

২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১১টি সমিতি বানিয়ে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ঠাকুরগাঁও শাখা থেকে সোলার পাম্প স্থাপনের নামে নেয়া হয় ব্যাংক ঋণ।

কৃষকদের অভিযোগ, রহিম আফরোজ ও শেরপা নামের দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৭টি সৌরবিদ্যুৎচালিত সেচপাম্প স্থাপন করে ব্যাংকটি। যা চালু হওয়ার কিছুদিন পর তারা জানতে পারেন, তাদের অজান্তেই সমিতির সদস্যদের নামে ঋণ পাস করে এই সোলার পাম্পগুলো বসানো হয়েছে।

প্রতিটি সোলার পাম্প স্থাপনের বিপরীতে ঋণের পরিমাণ ছিল ৩০ থেকে ৬০ লাখ টাকা। ১০ বছর পর যা সুদে আসলে দাঁড়িয়েছে ১৫ কোটি টাকায়। কৃষকদের অভিযোগ তারা এই ঋণ সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। তাদের দাবি ব্যক্তিগত কৃষিঋণের সাথে কৌশলে এই ঋণ জুড়ে দিয়েছে ব্যাংকটি। এখন এই ঋণ আদায়ের জন্য কৃষকদের নামে মামলা ও জমি নিলামের উদ্যোগ নিয়েছে ব্যাংক। এতে দুশ্চিন্তায় ভুক্তভোগী কৃষকরা।

এদিকে, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বলছে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেই ঋণ দেয়া হয়েছে চাষিদের।

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘প্রজেক্ট গুলো বন্ধ করে দিয়েছে। তবে প্রজেক্ট গুলো চালু করা কঠিন কোনো কাজ না, কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা কৃষকদের সহযোগিতা করত।’

মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ঠাকুরগাঁও শাখার ব্যবস্থাপক তাইমুর হোসাইন বলেন, ‘সব নিয়মকানুন মেনেই উনারা জমি বন্দক রেখেছিলেন। এখানে আসলে আমি ব্যাংকের কোনো ভুল দেখি নাই, যেহেতু আমি তো শুরুতে ছিলাম না, তবে যখন থেকে আমি ব্যাংকের সঙ্গে আছি ব্যাংক নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী সব ঋণ দেয়া হয়েছে।’

ইতোমধ্যেই প্রকল্পসংশ্লিষ্ট সবগুলো সমিতির নামেই করা হয়েছে মামলা। আর এই সমিতিগুলোর সদস্য সহস্রাধিক কৃষক। সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন ভুক্তভোগীরা।

এএম