তিনি আরো বলেন, ‘এখন থেকে প্রকল্পের বিস্তারিত গণমানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।'
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা আরো বলেন, ‘প্রকল্পের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য এখন থেকে প্রকল্পের কাজের সাথে স্থানীয় প্রশাসন এবং জনগণকে যুক্ত করা হবে। এরইসঙ্গে নেয়া হবে জনগণের মতামত।প্রকল্পে সময় কোনোভাবেই বাড়ানো যাবে না, সময় বাড়লেই ব্যয় বাড়ে। যার সাথে দুর্নীতি জড়িত।’
এখানে পরিবেশ উপদেষ্টা আরও জানান, সময়মত অর্থ ছাড় না করা, প্রকল্পের বিস্তারিত জনসম্মুখে প্রকাশ না করাসহ যেসব বিষয় স্বচ্ছতা নিশ্চিতে বাঁধা হচ্ছে সেসব বিষয় সমাধানের জন্যই অর্থ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টারা এক হয়েছেন।
এখান থেকে বের হয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ জানান, তারা এমন একটি কাজ করে যেতে চান, যাতে ভবিষ্যতেও আর কেউ যাতে দুর্নীতি না করতে পারে। বলেন, ‘প্রকল্পে ভবিষ্যতে যাতে দুর্নীতি বন্ধ হয় সে ব্যবস্থা করছি আমরা। রাজনৈতিকভাবে ঠিকাদার নিয়োগ চলবে না। ছোট-বড় সব ধরনের প্রকল্পে রাজনীতি ও সিন্ডিকেটমুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। কোনোভাবেই ঠিকাদার নিয়োগে দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না। এছাড়া প্রকল্পের কাজের সাথে জড়িত দুর্নীতিবাজদের ব্যাপারেও কঠোর হচ্ছে সরকার। এজন্য করা হচ্ছে নীতিমালা।’
শিক্ষা-পরিকল্পনা, পরিবেশ-পানি, অর্থ, সড়ক-বিদ্যুৎ, এলজিইডি-ক্রীড়া বিষয়ক উপদেষ্টার উপস্থিতিতে সম্পন্ন এ বৈঠকে স্তরভিত্তিক প্রকল্প অগ্রগতি মূল্যায়নসহ গণমানুষকে প্রকল্পে অংশগ্রহণের বিষয়ে আলোচনা হয়।
২০১৭ সালে বিশ্বব্যাংকের দেয়া তথ্যমতে, ভারতে যেখানে প্রতি কিলোমিটার চার লেনের সড়ক নির্মাণে খরচ হয় ১১ থেকে ১৬ লাখ ডলার, সেখানে বাংলাদেশে সে খরচ ২৫ লাখ থেকে এক কোটি ডলারেরও বেশি। এবং ঐ প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছিলো, চীন ভারতের মত প্রতিবেশি দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে সড়ক নির্মাণ খরচ কোন কোন ক্ষেত্রে ১০ গুণ পর্যন্ত।
সম্প্রতি দুর্নীতি নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংস্থা টিআইয়ের বাংলাদেশ চ্যাপ্টার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে একই বিষয় নিয়ে। যেখানে উঠে এসেছে দুর্নীতির ভয়াবহ আরেক চিত্র। বলা হচ্ছে, গেল ১৪ বছরে শুধু সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নামের একটি দপ্তরের উন্নয়ন প্রকল্পে ৩০ থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে, যা দিয়ে আরেকটি পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব। টিআইবি বলছে, উন্নয়ন প্রকল্পের নির্মাণ কাজে সার্বিক দুর্নীতির হার ২৩ থেকে ৪০ শতাংশ। এর মধ্যে কাজ পেতে কিংবা ঠিকাদারের বিল পেতে ঘুষ দিতে ১১ থেকে ১৪ শতাংশ বরাদ্দ। নির্মাণ কাজ করতে গেলে, রাজনীতিবিদ, ঠিকাদার কিংবা উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের দিতে হতো আরও প্রায় ১২ শতাংশ টাকা।