এক দশক আগে কার্প জাতীয় মাছ মোটাতাজাকরণের কাজ শুরু হয়েছিল উত্তরের জেলা নাটোর থেকে। মিশ্র চাষে কার্প জাতীয় মাছে সফলতা আসায় স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকে।
তবে মাছ চাষে এক পরজীবী তাড়া করে বেরাচ্ছে নাটোরের চাষিদের। গিল ফ্লুকস বা ফুলকা কৃমি ২০২১সালে ভারতে প্রথম কার্প জাতীয় মাছে দেখা দেয়। যা পরবর্তীতে ছড়িয়ে পড়েছে নাটোরসহ সারা দেশে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাছের ফুলকায়, খাদ্যনালী এবং শরীরে এই তিন জায়গায় পরজীবীতে প্রথম আক্রান্ত হয় মাছ। বিশেষ করে রুই জাতীয় মাছে এটি বেশি দেখা যায়।
কৃষি পরামর্শ কেন্দ্রের কৃষিবিদ সুদীপ দাস বলেন, ‘মাছের বৃদ্ধি হচ্ছে না, মাছ মারা যাচ্ছে এইটার কারণ হচ্ছে মাছ অসুস্থ পরজীবী দ্বারা। যার ফলে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হচ্ছে মাছের। এতে চাষিদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে।’
নাটোর জেলায় ২০১৭-১৮ মৌসুম থেকে বাড়তে থাকে মাছের উৎপাদন। বর্তমানে জেলায় ৩১হাজার ৩২০টি পুকুর থেকে প্রতিবছর অন্তত ৬০ হাজার মেট্রিক টন চাষের মাছ উৎপাদন হচ্ছে । তবে মোট উৎপাদনের অর্ধেকই কার্প জাতীয় মাছ।
তবে নতুন নতুন রোগ নিয়ে ভাবতে হচ্ছে চাষিদের। তবে মাছে ফুলকা কৃমিসহ নানা রোগে আক্রান্ত হলেও সংকট কাটাতে মিলছে না সঠিক ধারণা।
চাষিদের একজন বলেন, ‘আমরা তো বুঝতে পারি না। যখন পুকুরে খাবার দেই তখন পুকুরের কালার চেঞ্জ হয়ে যায়।’
আরেকজন বলেন, ‘আমরা না জেনে ট্রিটমেন্ট শুরু করেছি যার ফলে সেইভাবে উৎপাদন বাড়েনি। এতে আর্থিকভাবে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।’
কার্প জাতীয় মাছ চাষে পরজীবী থেকে বাঁচাতে মাছের রেণু শোধন, পুকুর জীবানুমুক্তসহ নানা পরামর্শ দিচ্ছেন স্থানীয় মৎস্য বিভাগ।
নাটোর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘পুকুর সব সুন্দরভাবে প্রস্তুত। তবে পোনা মাছের সঙ্গে জীবাণুটা চলে আসতে পারে। তাই মাছ পুকুরে ছাড়ার আগে পোনাশোধন করে নেয়া।’
বিগত কয়েক বছর ধরে বদ্ধ জলাশয়ে মাছ চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে নাটোর জেলার মৎস্যজীবীরা। এজন্য মাছচাষীদের মাছে নতুন নতুন পরজীবীর পাশাপাশি রোগ সম্পর্কে সচেতন করার পাশাপাশি প্রশিক্ষণ দেয়া হলে সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে তারা।