স্বাস্থ্য
বিদেশে এখন
0

প্রকট হচ্ছে সুপারবাগ সংকট, নতুন অ্যান্টিবায়োটিক উদ্ভাবনে জোর

অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়া বা সুপারবাগ সংকট দিনদিন প্রকট হচ্ছে। নতুন এক গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, ২০৫০ সাল নাগাদ অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে সারাবিশ্বে প্রায় ৪ কোটি মানুষের মৃত্যু হতে পারে। দ্য ল্যানসেট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাকটেরিয়াগুলো এমনভাবে তৈরি হচ্ছে যে, ওষুধ দিয়ে সেগুলোকে নির্মূল করা সম্ভব না। এই পরিস্থিতি প্রতিরোধে বিজ্ঞানীরা স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়ানোর পাশাপাশি নতুন অ্যান্টিবায়োটিক উদ্ভাবনে জোর দিয়েছেন।

সাধারণত নিউমোনিয়া, যক্ষা, হুপিং কাশি, মেনিনজাইটিস, সিফিলিস, ধনুষ্টঙ্কারসহ অনেক রোগই হয় ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণে। এসব রোগ প্রতিরোধে খেতে হয় অ্যান্টিবায়োটিক। ব্যাক্টেরিয়া নির্মূলে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার প্রচলিত বহু আগে থেকেই।

কিন্তু সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে, ২৫ বছরের মধ্যেই ব্যাক্টেরিয়া সংক্রমণে অ্যান্টিবায়োটিক আর কোনো কাজে আসবে না। গ্লোবাল রিসার্চ অন অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স প্রকল্পের গবেষণা প্রকাশিত হয়েছে দ্য ল্যানসেট জার্নালে।

প্রতিবেদন বলা হয়েছে, ২০৫০ সাল নাগাদ অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাক্টেরিয়া বা সুপারবাগ এতো বাড়বে যে, মৃত্যু হবে ৩ কোটি ৯০ লাখ মানুষের। এর মধ্যে বয়স্কদের ঝুঁকিই সবচেয়ে বেশি। আগামী ২৫ বছরে এই ব্যাক্টেরিয়াগুলো পুরোপুরি অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠবে, ওষুধের মাধ্যমে এগুলো আর নির্মূল করা সম্ভব হবে না।

চিকিৎসাবিজ্ঞানে অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিট্যান্স হিসেবে পরিচিত বিশেষ এই পরিস্থিতি তখন তৈরি হয়, যখন ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়ার মতো পরজীবীর ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিষেধক কাজ করে না।

গ্লোবাল রিসার্চ অন অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল রেজিস্ট্যান্স প্রকল্পে কাজ করেছে বিশ্বের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সংস্থা। গবেষণায় উঠে এসেছে, ১৯৯১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী সংক্রমণে শিশুদের তুলনায় বয়স্কদের মৃত্যুর হার বেশি।

গবেষণা বলছে, চলতি শতকের মাঝামাঝি বছরে সুপারবাগের কারণে ১৯ থেকে ৮০ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। ২০২১ সালে এই সংখ্যা ছিলো ১১ লাখ। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হবে দক্ষিণ এশিয়া, লাতিন আমেরিকা, ক্যারিবীয় আর সাব সাহারা আফ্রিকায়।

তবে বিশ্বের ২০৪টি দেশের ওপর করা গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য বলছে, নতুন অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়িয়ে সংক্রমণ রোধ করা গেলে লাখ লাখ মানুষকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচানো সম্ভব।

তবে গবেষকরা জানান, মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবায় ৯০ লাখ মানুষের মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব, যেখানে নতুন ওষুধ উৎপাদন করে ১১ লাখ মানুষ বাঁচানো সম্ভব।