দেশে এখন
0

ভারি বৃষ্টিতে নড়াইলে তলিয়ে গেছে সাড়ে তিন হাজার ঘের-পুকুর

চলতি বছর সারাদেশের মতো নড়াইলেও কয়েক দফায় ভারি বৃষ্টি হয়েছে। তলিয়ে গেছে জেলার অন্তত সাড়ে তিন হাজার ঘের ও পুকুর। মৎস্য ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরাও। সব মিলিয়ে নড়াইলে কৃষি ও মৎস্য খাতে ক্ষতির পরিমাণ অন্তত শত কোটি টাকা।

বিলে ঘেরা জেলা নড়াইল। কৃষি কাজ ও মাছ চাষ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন এখানকার বেশিরভাগ মানুষ। ধান, পাট, গমসহ বিভিন্ন ফসলের পাশাপাশি এ জেলার অন্তত ৫০ হাজার মানুষ মৎস্য চাষের সাথে জড়িত।

মো. আহাদউজ্জামান, এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জড়িত মৎস্য চাষের সাথে। নড়াইল পৌর এলাকার ভওয়াখালী বিলে তিনটি ঘের রয়েছে তার। টানা বৃষ্টিতে তার সবকটি ঘের তলিয়ে গেছে, নষ্ট হয়েছে ঘের পাড়ের বিভিন্ন প্রকার সবজি।এখন মাছের ঘের করতে নেয়া ধারের টাকা পরিশোধ নিয়ে রয়েছেন দুশ্চিন্তায়।

মৎস্য চাষি মো. আহাদউজ্জামান বলেন, '৩ টা ঘেরই তলায় গেছে। তারপর ৬ লাখ টাকার মাছ ছেড়েছিলাম সেই মাছ সব বিলে চলে গেছে। ঘেরের পাশে সবজি লাগিয়েছিলাম সেই সব ও তলায় গেছে।'

চলতি মৌসুমে কয়েক দফা বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে এলাকার রাস্তাঘাট, ক্ষেতের ফসল, সাড়ে তিন হাজার ঘের ও পুকুর। আর এতে আহাদউজ্জামানের মত বিপাকে পড়েছেন নড়াইল সদর, লোহাগড়া ও কালিয়া উপজেলার হাজারো মৎস্য ব্যবসায়ী ও কৃষক।

মৎস্য চাষি মো. আহাদউজ্জামান । ছবি: এখন টিভি

কৃষকদের মধ্যে একজন জানান, সব ঘের ভেসে গেছে নেট দিয়েও ঠেকাতে পারি নাই।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। বরাদ্দ পেলে মৎস্য ব্যবসায়ী ও কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ সরবরাহ করা হবে।

নড়াইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: আশেক পারভেজ বলেন, 'প্রায় ২ কোটি টাকার উপর আমাদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রোপা আমনের মাটি নিমজ্জিত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু প্রণোদনার কার্যক্রম এসেছে। আমরা প্রায় ২ হাজার কৃষককে সবজি এবং সার বিনামূল্যে বিতরণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছি।'

নড়াইলের জেলা মৎস্য অফিসার এইচ এম বদরুজ্জামান বলেন, 'আমাদের যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা আমরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এবং তথ্য আমরা পাঠিয়েছি। আর পরবর্তীতে যদি আমরা কর্তৃপক্ষ থেকে কোনো সাহায্য পোছে থাকি তাহলে আমরা কৃষকদের অবগত করতে পারবো।'

নড়াইল প্রায় ৮ লাখ মানুষের জন্য মাছের চাহিদা রয়েছে ১৬ হাজার টন। প্রতি বছর উৎপাদন হয় অন্তত ১৮ হাজার টন। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অন্তত ২ হাজার মে. টন মাছ অন্যান্য জেলায় পাঠানো হয়।