বাড়ির মধ্যে পানি থৈ থৈ করছে। তলিয়ে গেছে টিউবওয়েল। ঘরের বাসিন্দারা পানির মধ্যেই খারারের জোগাড় নিয়ে ব্যস্ত। বৃষ্টি হলেই বরিশাল শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা নবগ্রাম রোডের আশপাশের ঘর বাড়ির মানুষের দুর্ভোগের চিত্রটা এমনই হয়।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে একজন জানান, আমাদের এই বাড়ি একটু বৃষ্টি হলেই ৪ - ৫ দিন পর্যন্ত ঘরে পানি থাকে।
আরও একজন জানান, ড্রেন ভরার কারণে পানির এই অবস্থা।
শুধু নবগ্রাম রোড নয়, বৃষ্টি হলে এখন নগরীর সদর রোড, বগুড়া রোড, কালীবাড়ি রোড, শীতলাখোলা, গোরস্থান রোড, কাউনিয়া জানুকিসিংহ রোড, ভাটিখানা, আমানতগঞ্জ, কলেজ এভিনিউ, অক্সফোর্ড মিশন রোড সহ বিভিন্ন সড়ক পানিতে ডুবে যায়। খাল গুলো দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়দের মধ্যে একজন জানান, ২০ মিনিট বৃষ্টি হলেও এই অফিস জন সমুদ্রে পরিণত হয়।
পৌরসভা থেকে ২০০১ সালের ৯ এপ্রিল রূপান্তরিত হয় বরিশাল সিটি কর্পোরেশন। সিটি কর্পোরেশন ঘোষণার আগে পৌরসভা আমল থেকেই বরিশালে উন্নয়নের নামে শুরু হয় নানা কর্মযজ্ঞ। অপরিকল্পিত উন্নয়ন এবং খাল দখল- দূষণে নগরীর এই পরিণতি হয়েছে। নগর উন্নয়ন ফোরাম মনে করছে গণঅভ্যুত্থান পরর্তী সময়ে এখনই উন্নয়ন কাজ করার উপযুক্ত সময়।
বরিশাল নগর উন্নয়ন ফোরামের সদস্য সচিব কাজী এনায়েত হোসেন বলেন, 'এইখানে মেয়র না থাকলেও সরকারের প্রশাসক হিসেবে একজন দায়িত্বরত আছেন । আমি আশা করবো তিনি যেন এই উদ্যোগটা দ্রুত যাতে নেয়। তাহলে আমাদেরকে আর এই ধরনের পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হবে না।'
যদিও বরিশাল নগরীর খাল গুলো পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চলছে। খালসহ নর্দমা পরিষ্কার হলে জলাবদ্ধতা থাকবে না বলে মনে করেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো. শওকত আলী বলেন, 'আমরা এই বৃষ্টির মধ্যেও খাল পরিষ্কার করেছি। এখন কিছু ড্রেনেজ আছে অভ্যন্তরীণ ভাবে এইগুলো পরিষ্কার করে দিলেই আমার বিশ্বাস বৃষ্টি বাদলের দিনে পানি আর রাস্তার উপরে থাকবে না। বৃষ্টির পানি খাল হয়ে নদীতে পতিত হবে।'
ব্রিটিশ আমলে বরিশালে ১০৮ টি খাল ছিল। পাকিস্তান আমলে এই সংখ্যা কমে গিয়ে হয় ৪৬টি। স্বাধীনতার পর ২২ থেকে ২৩টি খাল ছিল। বর্তমানে ৮ থেকে ১০ টি খালের অস্তিত্ব আছে। তবে তাও হারিয়ে যাবার পথে।