দেশে এখন
0

আজ প্রবারণা পূর্ণিমা, বুদ্ধ ভক্তদের মাঝে উৎসব আমেজ

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দ্বিতীয় প্রধান ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা আজ। দিবসটিকে ঘিরে দেশজুড়ে উৎসবের আমেজ বুদ্ধের ভক্ত অনুসারীদের মাঝে। সকাল থেকেই প্রদীপ প্রজ্বলন, পূর্জা আর্চনা ও ভোগ সামগ্রী প্রদানে বিহারে বিহারে জড়ো হচ্ছেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। রাতে শুরু হবে প্রধান আকর্ষণ ফানুস উড়ানো । ভক্তদের প্রার্থনা, যে অহিংসার বাণী, সম্প্র্রীতির বাণী প্রচার করেছেন গৌতম বৌদ্ধ, সে বাণী আজকের এই দিনে ছড়িয়ে পড়বে পৃথিবীজুড়ে। দূর হবে হানাহানি, যুদ্ধ, বিগ্রহ। দিবসটিকে ঘিরে নাশকতা এড়াতে কঠোর নিরাপত্তা ছিল বিহারগুলোতে।

নন্দনকানন শতবর্ষী বৌদ্ধ বিহারে সকাল থেকেই শুরু হয় ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান, বুদ্ধের স্মরণে প্রার্থনা। বট গাছের নিচে রাখা বৌদ্ধ মূর্তিতে প্রদীপ প্রজ্বলন করেন ভক্তরা।

বলা হয়, বর্ষার সময় আষাঢ় মাসে গৌতম বৌদ্ধ গহীন পাহাড়ে তিন মাসের ধ্যানে যান। এসময় তিনি ধ্যানের পাশাপাশি উপবাস দিন কাটান। তিন মাস পর আজকের এই দিনে তিনি ফিরে আসেন ভক্তদের মাঝে।

দ্বিতীয় প্রধান এ ধর্মীয় দিনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ সারাদেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মাঝে। সেজেগুজে নতুন পোশাকে বিহারে ছুটে আসেন নানা বয়সি মানুষ। অষ্টশলি, পঞ্চশলি গ্রহণ, বুদ্ধ পূজা, বৌদ্ধের উপবা্স ভাঙাতে ফুল ফল জল প্রদান করেন সবাই। চলে ধর্মীয় আদেশ প্রদান।

ভক্তদের মধ্যে একজন জানান, এটা আমাদের ২য় একটা বড় উৎসব। প্রতি বছরই আমরা এই উৎসব পালন করে থাকি। এটা আমাদের খুব আনন্দের একটি দিন।

এ বছর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সব জায়গায় কিছুটা অস্থিরতা বিরাজ করছে, যুদ্ধ চলছে সারা পৃথিবীতে। ভক্ত, অনুসারীদের আশা, পৃথিবীব্যাপী শান্তি, সম্প্রীতির রক্ষা ও যে অহিংস ধর্ম প্রচার করেছেন তিনি, সে বার্তা ছড়িয়ে পড়বে বিশ্বজুড়ে।

আরও একজন জানান, সেনাবাহিনী, প্রশাসন যেভাবে আমাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করছে সেক্ষেত্রে আমরা কোনো ভয় পাচ্ছি না সমতলের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। আমরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সবসময় অহিংস পরম ধর্ম পালন করি।

ধর্মীয় আচারের পাশাপাশি আজ ঘরে ঘরে অতিথি আপ্যায়ন, বন্ধু বান্ধবসহ ঘোরাঘুরি, আত্মীয়ের বাড়িতে যাওয়াসহ নানা আয়োজন থাকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের। শান্তিপূর্ণভাবে যাতে দিবসটি পালন করা যায় সেজন্য নেয়া হয়েছে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, 'ফানুস প্রজ্বলনের সময় যাতে কোনো অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা না ঘটে। সেই বিষয়সহ সার্বিক সহযোগিতায় আমরা কাজ করে যাচ্ছি।'

নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারের প্রধান ধর্মীয় গুরু জিনবোধী ভিক্ষু বলেন, 'স্বগৌরবে উৎযাপন করতে চলেছি সারাদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে।'

প্রবারণা পূর্ণিমার প্রধান আর্কষণ ফানুস উড়ানো, রথ টানা এবং কঠিন চীবর দান উৎসবও পালন হচ্ছে বিহারে বিহারে। তবে এ বছর তিন পার্বত্য জেলায় কঠিন চীবর দান উৎস পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভিক্ষুরা।