নওগাঁ শহরের প্রাণকেন্দ্রজুড়ে প্রধানতম সড়কের চিত্র এটি। যানজটের এই দুর্ভোগ নিত্যদিনের। প্রতিনিয়ত শহরবাসীকে পড়তে হয় বিপাকে।
জীবন ও জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন গ্রাম থেকে শহরে আসছে মানুষ। ঘুরছে চাকা-বাড়ছে যানবাহন। এতে তৈরি হচ্ছে যানজট। বিশেষ আশপাশের এলাকা থেকে শহরে ঢুকে পড়া সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার কারণে তৈরি হচ্ছে বাড়তি দুর্ভোগ।
শহরবাসীদের মধ্যে একজন জানান, পিঁপড়ার সারির মতো লেগেই থাকে যানজট। অর্থাৎ সকাল আটটার পর থেকে রাত দশটা পর্যন্ত ভিড় থাকে। এই ভিড়ে সাধারণ মানুষের চলাচল করা সম্ভব হয়নি।
আরও একজন বলেন, 'এই যানজটের কারণে বাচ্চাদের নিয়ে কোথাও যেতে পারি না। এমনকি বাচ্চাদের স্কুলের সময়ও পার হয়ে যাই।'
জেলা শহরের ধারণ ক্ষমতার প্রায় তিনগুণ যানবাহন প্রতিদিন চলাচল করে। এর বড় একটি অংশ অটোরিকশা। তথ্য বলছে, জেলা শহর থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার অটোরিকশা ছেড়ে যায়। যেখানে সেখানে গাড়ি পার্কিং এবং অবৈধভাবে চলাচলে তৈরি হয় অচল অবস্থা। নতুন কোনো রাস্তা তৈরি না হওয়া এবং সড়কগুলো প্রশস্ত না হওয়ায় বাড়ছে যানজট।
রিকশাচালকদের মধ্যে একজন জানান, এই যানজটের কারণে প্রায়সময়ই আমাদের ২৫০ থেকে ৩০০ টাকার মতো আয় কমে যাই।
চালকদের মধ্যে একজন জানান, রাস্তা ছোট হওয়ার কারণে আমরা যেতে পারছি না। এইজন্য কাঁচা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি।
নওগাঁ পুলিশ সুপার মো. কুতুব উদ্দিন বলেন, 'শহরে যাতে জনদুর্ভোগ না হয় সেই বিষয়ে আমরা কাজ করছি। শহর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এবং সাধারণ জনগণ সবার সাথে কথা বলে একটি আইনসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে বলে আমি আশা করছি।'
যানজটে আটকা পড়ায় যানবাহনে পুড়ছে জ্বালানি। কমছে কর্মঘণ্টাও। এতে ৩ হাজার চালকের প্রতিদিন অন্তত ৯ লাখ টাকা আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চালকরা। বিষয়টি নজরে আসলে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন পৌরসভার প্রশাসক।
নওগাঁ পৌরসভা প্রশাসক সোহেল রানা বলেন, 'আমরা চাই নওগাঁ শহরে যেই রিকশাগুলো চলবে বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাগুলোকে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় নিয়ে আসবো। তারপর আমাদের একটা পরিকল্পনা করতে সহজ হবে।'
১৯৮৯ সালে নওগাঁ পৌরসভা প্রথম শ্রেণির মর্যাদা পায়। কিন্তু জনসংখ্যা ও যানবাহন বাড়লেও রাস্তাঘাটগুলো এখনও সরু। এ অবস্থায় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রধান সড়কে সিএনটি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বন্ধের দাবি শহরবাসীর।