বন্যার পানিতে ভাসছে দুর্গত এলাকার বাড়িঘর, ফসলি জমি, মাছের খামার। খেয়ে না খেয়ে কোনোরকমে চলছে বানভাসি মানুষের জীবন।
ময়মনসিংহ অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনও মানবেতর জীবন যাপন করছেন বহু মানুষ। হালুয়ঘাট, ধোবাউড়া ও ফুলপুর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্দি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও যেতে চান না অনেকেই। দুর্ভোগ- দুর্দশা মাথায় নিয়েই রয়ে গেছে আপন ঠিকানায়। বৃষ্টি হলেই বেড়ে যায় পানি। এ নিয়ে দুশ্চিন্তা ভর করেছে নতুন করে।
স্থানীয় একজন বলেন, 'এই দুই দিনে পানি একটু কমেছিল। কিন্তু আজ রাতের বৃষ্টিতে আবার পানি বেড়েছে। বাড়িঘর তো সব পানির নিচে তলে গিয়েছে। আমরা রাস্তাঘাটে পড়ে আছি।'
একজন স্বেচ্ছাসেবী বলে, 'বন্যা দুর্গতদের উদ্ধার করে তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য এসেছিলাম। কিন্তু এই এলাকার মানুষ আসলে আশ্রয়কেন্দ্রের বিষয়ে এতো অবগত না। তারা আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে রাজি না।'
বন্যা কবলিত এলাকায় শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শিশু খাদ্যের জন্য চলছে হাহাকার। এদিকে সরকারি- বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হলেও তা যথেষ্ট নয়।
শেরপুরে ঝিনাইগাতি, নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। বসতবাড়ি থেকে নেমে যাচ্ছে পানি। তবে, বন্যা কবলিত এলাকায় দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েকগুণ। পানির তীব্র স্রোতে ভেঙ্গে গেছে বেশিরভাগ ঘরের অবকাঠামো। দেখা দিয়েছে বিভিন্ন পানিবাহিত রোগ। স্যাঁতসেতে বসতঘরে নেই রাত্রিযাপনের পরিবেশ। চারণভূমি ডুবে থাকায় খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে গবাদিপশুর।
নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় কমছে নেত্রকোণার সব কয়টি নদ নদীর পানি। তবে পানি কমলেও পর্যাপ্ত প্রাণ সহায়তার অভাবে রয়েছে বানভাসিরা। বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো পানিবন্দি চার উপজেলার প্রায় ৪০ হাজারের বেশি মানুষ।
এদিকে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা বলছেন, ময়মনসিংহে তিন উপজেলার বানভাসি মানুষের জন্য ৬৩ টন চাল ও সাত লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
ময়মনসিংহ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মুহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন বলেন, 'আমাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে জিআর চাল রয়েছে। এবং আমাদের নগদ ক্যাশও আছে চাহিদার প্রেক্ষিতে বিতরণের সাপেক্ষে প্রত্যেকের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়ার জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।'
এদিকে বন্যার পানিতে নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলায় এক বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে।