বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যখন নানা আলোচনা, যখন এ পরিবর্তনের পেছনে মনুষ্য অসচেতনতাকেই দায়ী করা হয়, তখন কেমন হয় যদি একটি প্রজন্ম ভিডিও গেইম খেলতে খেলতেই সচেতন হতে পারে জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে।
নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে অংশ নিয়ে টিম এভেঞ্জার্স বানাচ্ছে এমনই একটি কুইজ গেইম। খুলনা থেকে ঢাকায় আসা তরুণরা স্বপ্ন দেখছেন আনন্দেই যেন জলবায়ু নিয়ে শিখতে পারে তরুণ প্রজন্ম। এতে হয়তো এ পরিবর্তন থেকে রক্ষা পাবে পৃথিবী।
অংশগ্রহণকারীদের একজন বলেন, ‘নাসার অনেক তথ্য রয়েছে জলবায়ু সম্পর্কে তবে তারা সেটা সঠিকভাবে জানাতে পারছে না। এই চ্যালেঞ্জের মাধ্যমে এইসব তথ্য কীভাবে সহজে জানানো যায় মানুষকে সেটাই করা হচ্ছে।’
টিম এডভেঞ্জার্সের মতোই বাকি টিমগুলোও নিজেদের উদ্ভাবনে এনেছে নতুনত্ব। প্রতিযোগীরা প্রত্যেকেই নাসার ডেটা ব্যাংক থেকে তথ্য নিয়ে কেউ বানাচ্ছেন অ্যাপ , কেউ তৈরি করছে গেইম। কেউবা ড্রোন কিংবা রোবট। এবারের 'হেলিওফিজিক্স বিগ ইয়ার' চ্যালেঞ্জে সৌরজগতের ওপর সূর্যের প্রভাবকে সামনে রেখে ২০টি সমস্যার সমাধান বাতলে দিচ্ছে তারা। কমিউনিটি ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে প্রলয়ংকারি বন্যায় খাদ্য ঘাটতি ও নিরাপদ খাবার পানির মতো নানা বিষয়ের পাশাপাশি চৌম্বকীয় অভিকর্ষের মতো সময়ে যখন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ব্যবহার বিপজ্জনক হয়ে উঠবে তখন কীভাবে নিরাপদ যোগাযোগ রক্ষা করা যাবে তা নিয়েও মাথা ঘামাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া উদ্ভাবকেরা।
রাজধানীর অ্যামেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে সরাসরি ও ভার্চুয়ালি হওয়া নাসা স্পেস অ্যাপস চ্যালেঞ্জে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ৪শ'টি টিমের ২ হাজার জন অংশ নিয়েছে এ চ্যালেঞ্জে। আর ৩৬ ঘণ্টার এই চ্যালেঞ্জে সরাসরি অংশ নিয়েছে ৫০ দল। আয়োজকরা বললেন, উদ্ভাবনমনষ্ক তরুণদের মাধ্যমে আগামীর পৃথিবী গড়তে গত প্রায় একযুগ সময় ধারে এ আয়োজন করছেন তারা। ১৮৫টি দেশকে পেছনে ফেলে তিনবারসহ সর্বমোট চারবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। তাই এবারও চ্যাম্পিয়ন হয়ে সফলতার ধরা ধরে রাখতে চায় বাংলাদেশ।
নাসা স্পেস অ্যাপ চ্যালেঞ্জ কো-অর্ডিনেটর (বাংলাদেশ) মো. মেহেদী-উজ জামান বলেন, ‘গতবার কীভাবে চ্যাম্পিয়ন হলো, কেন হয়েছে তা আমাদের জানা আছে। শুধু তাইনা আমরা একটা গাইড বানাই যেটাকে বলে পার্টিসিপেট গাইড যেটা নাসা নিয়ে অন্য দেশকে বলো তোমরাও এইটা ফলো করো।’
বেসিস সভাপতি রাসেল টি আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ একমাত্র দেশে যারা পর পর তিনবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমার বিশ্বাস এইবারও মেধাবীরা এসেছে এবারও মাল্টিপল ক্যাটাগরিতে আমরা চ্যাম্পিয়ন হবো।’
শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হবে নাসা স্পেস অ্যাপসের এই গ্লোবাল চ্যালেঞ্জ। দুপুর থেকে স্থানীয় বিচারকেরা মূল্যায়ন শুরু করবেন প্রতিযোগীদের প্রকল্পগুলো। যাচাইবাছাই শেষে বৈশ্বিকভাবে প্রতিযোগিতায় অংশ নিবে ২০ দল।