প্রকৃতিতে মোহনীয় শরতের ছোঁয়া, সাদা মেঘ আর শেফালির শুভ্রতা। এই শুভ্রতা জানান দিচ্ছে শারদ উৎসবের বার্তা।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে, পাড়ায় পাড়ায় আনন্দ আয়োজন। বছর ঘুরে আবারও কৈলাস ছেড়ে মর্ত্যে আসবেন দেবী দুর্গা। তাই তো দেবী বন্দনার প্রস্তুতি মন্দিরে মন্দিরে।
রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার মন্দিরগুলোতে শুরু হয়েছে প্রস্তুতিপর্ব। মণ্ডপে মণ্ডপে শিল্পীরা মনের মাধুরী দিয়ে তৈরি করছেন দুর্গা প্রতিমাকে, রাঙিয়ে তুলছেন রং-তুলির আঁচড়ে।
এ বছর দেশের ৩২ হাজার ৬৬৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদ্যাপিত হবে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীর দুই সিটিতে ২৫৩টি মণ্ডপে পূজা উদ্যাপন করা হবে।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে একজন বলেন, 'বাংলাদেশে কিন্তু এই উৎসবগুলো আসলে সবার । ইদে আমরা ইদ পালন করি সবাই মিলে। আর শারদীয় উৎসবে আমাদের পাশাপাশি মুসলমান ভাই বোনেরা , বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই থাকে।'
সাম্প্রতিক সময়ের যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তাতে কোনভাবে পূজা উদ্যাপন ব্যাহত হবে না বলে আশাবাদ মহানগর পূজা উদ্যাপন কমিটির। তাদের প্রত্যাশা, অসাম্প্রদায়িক চেতনায় প্রতিবছরের মতো এবারও শারদীয় উৎসবে শামিল হবে সবাই।
ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব বলেন, 'সিটি করপোরেশনের কাছে ঢাকা শহর যাতে কোনো অন্ধকার অলিগলি না থাকে এবং আমরা আরও দাবি জানিয়েছি ইদের সময় যেমন আলোকিত হয়। পূজাও যাতে এমন আলোকিত হয়। বাংলাদেশ হচ্ছে বৈষম্যের বিরুদ্ধে। আমরা চাই এদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান প্রত্যেকটা লোক তার শ্রম অধিকার পালন করুক।'
সাম্প্রতিক সময়ে সম্প্রীতি বিনষ্টকারী যেকোন অপশক্তিকে রুখে দিতে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন কমিটির। তাদের আশা, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা আয়োজনে সহায়তা করবে অন্তর্বর্তী সরকার।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, 'ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্যে,ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে সবাইকে সম্পৃক্ত করে সারা বাংলাদেশের জেলা কমিটিকে বলেছি সেনাবাহিনী এবং আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করতে হবে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমরা আস্থা পাচ্ছি।'
এদিকে পূজার শুরু থেকে বিসর্জন পর্যন্ত কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে বলে জানায় ডিএমপি। থাকবে সার্বক্ষণিক সিসিটিভি ক্যামেরা। পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশের পাশাপাশি দায়িত্ব পালন করবে সোয়াত, কুইক রেসপন্স টিমসহ বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট।
ডিএমপি অতিরিক্ত উপ কমিশনার মো. ওবায়দুর রহমান বলেন, 'নির্বিঘ্নে তারা যাতে উৎসব পালন করতে পারে সেক্ষেত্রে ঢাকা মেট্রপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে তাদেরকে বলা হয়েছে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
২ অক্টোবর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবী পক্ষের সূচনা হবে। ১৩ অক্টোবর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসবের।