মিষ্টির দোকানে উপচে পড়া ভিড়। পছন্দের মিষ্টি কিনতে আগ্রহের কমতি নেই ক্রেতাদের । সম্প্রতি ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জনপ্রিয় ছানামুখী মিষ্টি। জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ার পর ক্রেতাদের বাড়তি আগ্রহ তৈরি হয়েছে এই মিষ্টি ঘিরে।
চতুর্ভুজ আকৃতির ছোট্ট মিষ্টির ওপরের অংশে চিনির আবরণ আর ভেতরে দুধের নরম ছানা। মুখে দিলেই অতুলনীয় এক স্বাদ। ব্রিটিশ আমলে ছানামুখীর উৎপত্তি পর থেকেই জেলায় আগত দেশি-বিদেশি অতিথি আপ্যায়নে খাবারের তালিকায় যুক্ত হয়েছে বিশেষ এই মিষ্টি। স্বাদে অনন্য হওয়ায় সবসময় ভোক্তাদের চাহিদার শীর্ষে থাকে ছানামুখী মিষ্টি। তবে এই মিষ্টি তৈরি করতে হয় বেশ যত্ন নিয়ে। যাতে অন্যসব মিষ্টির চেয়ে সময় লাগে বেশি।
জনশ্রুতি আছে, ১৮৩৭ সালে ভারতের কাশীধাম থেকে আগত মহাদেব পাঁড়ে প্রথম ছানামুখী তৈরি করেন। তার স্মৃতির ধারক হয়ে শহরের মহাদেবপট্টিতে এখনও টিকে আছে মহাদেব মিষ্টান্ন ভাণ্ডার। বর্তমানে অন্তত ২০টি দোকানে ছানামুখী তৈরি হয়। প্রতিদিন কেনাবেচা হয় অন্তত ৩০০ কেজি ছানামুখী। প্রতি কেজির দাম ৭০০ টাকা।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর ছানামুখীকে জিআই পণ্যের স্বীকৃতি দিয়ে জেলা প্রশাসনকে চিঠি পাঠায় পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তর। এতে খুশী ছানামুখীর কারিগর থেকে শুরু করে জেলার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।
ইতোপূর্বে জেলা প্রশাসন কর্তৃক তৈরি ব্র্যান্ডবুকে ঠাঁই পায় ছানামুখী মিষ্টি। বিশেষ এই পণ্যটির আরও প্রসারসহ রপ্তানি পণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ছানামুখী মিষ্টি ছাড়াও জেলার ঐতিহ্যের স্মারক কুটিবাজারের ক্ষীরভোগ, সরাইলের হাঁসলি মোরগ ও গ্রে-হাউন্ড কুকুরের জিআই স্বীকৃতির জন্যও পেটেন্ট, শিল্প-নকশা ও ট্রেডমার্কস অধিদপ্তরের কাছে আবেদন করেছে জেলা প্রশাসন।