দেশে এখন
0

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘে ড. ইউনূসের তিন প্রস্তাব

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতিসংঘের সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রথমবারের মতো মহাসচিবের নেতৃত্বে রোহিঙ্গাদের নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব রোহিঙ্গা করার প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। আরেক সাইডলাইন বৈঠক মিট দ্য ফ্রেন্ডস বাংলাদেশে তিনি বলেন, অনন্য এক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে দেশ পুনর্গঠনের দায়িত্ব পেয়েছেন তারা।

মিয়ানমারের রাখাইন থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে আসা লাখ লাখ রোহিঙ্গা এখন অবস্থান করছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী কক্সবাজার উপকূলে। মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক সরকার কিংবা জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে এই জনগোষ্ঠীকে ফিরিয়ে নেয়ার তেমন কোনো দেখা যায়নি কোনো সময়।

ছাত্র জনতার গণ অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা দেশ ছাড়লে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নিয়ে দেশের চলমান সব সংকটের মতো রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের দায়িত্বও কাঁধে তুলে নিয়েছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে অধিবেশনের ফাঁকে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ড. ইউনূস বলেছেন, সহানুভূতি থাকলেও ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গার প্রত্যাবাসনে দেশ আর্থসামাজিক আর পরিবেশের দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশ এই সংকট সমাধানে সীমা অতিক্রম করেছে। তবে তাদের নিজ দেশে নিরাপদে আর সসম্মানে ফিরিয়ে দিতে সব সহযোগিতাই বাংলাদেশ করবে বলে জানান তিনি।

উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত অনেক প্রস্তাব আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত হলেও একজন রোহিঙ্গাও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। সেই সঙ্গে মানবিক সহায়তাও কমছে। এই সংকট সমাধানে এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ইস্যুতে তিনটি প্রস্তাব দেন প্রধান উপদেষ্টা।

বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব রিয়াজ হামিদুল্লাহ বলেন, ‘উপদেষ্টা জাতিসংঘের মহাসচিবের নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গাদের নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অব রোহিঙ্গা করার প্রস্তাব দেন। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তা ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে আসায় আন্তর্জাতিকভাবে জয়েন্ট রেসপন্স গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।’

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে জাতিসংঘের সাইডলাইন বৈঠকে কথা বলেন ড. ইউনূস। ছবি: পিআইডি

এই বৈঠকে মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত জুলি বিশপ, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে, এই বৈঠক শেষে আরেক সাইডলাইন বৈঠকে মিট দ্য ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়েই দেশ পুনর্গঠনে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েছে এবং কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশে অনন্য এক বিপ্লব হয়েছে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আসায়।

এছাড়া ক্লিনটন গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ শীর্ষক অনুষ্ঠানেও যোগ দেন প্রধান উপদেষ্টা। এই অনুষ্ঠানে ছাত্র জনতার আন্দোলনের তরুণ নেতৃত্বদের বিশ্বমঞ্চে পরিচয় করিয়ে দেন।

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর