স্বাস্থ্য
দেশে এখন
0

ছাত্র আন্দোলনে গুরুতর আহতদের পর্যবেক্ষণে চীনা চিকিৎসকরা

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুরুতর আহতদের পর্যবেক্ষণ করছেন চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসেন তারা। এসময় বার্ন ইউনিটে ভর্তি থাকা ৩৭ জন রোগীর খোঁজখবর নেন তারা। চীন ও বাংলাদেশের চিকিৎসকদের সমন্বয়ে আহতদের উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতে চীন পাশে থাকবে বলেও আশ্বাস মিলেছে।

শপথ ছিলো রুখে দিবে বৈষম্য। প্রতিষ্ঠা হবে সাম্য। সে লক্ষ নিয়ে ছাত্র-জনতা লড়েছিল রাজপথে।

স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারকে হটানো এতটা সহজ ছিলো না। ঝরে হাজার প্রাণ। অঙ্গ হারানোদের দীর্ঘ সারি। এ যেমন মাদারীপুর সরকারি কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দিঙ্কর বালা। ১৯ জুলাই পুলিশের শর্টগানের গুলিতে ঝাঁজরা হয় বাম পা। রক্ত সঞ্চালন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পচন ধরে। বর্তমানে চলছে ঢাকা মেডিকেল বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে চিকিৎসা।

দিপঙ্কর জানান, ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছিল কোনো এক ক্রমে আমরা ছাত্র ভঙ্গ হয়ে যায়। তখন দুভাগ্যক্রমে আমি পুলিশের সামনে পড়ে যায় এবং পায়ে গুলি করে যার কারণে এই অবস্থা।

মাদারীপুর সরকারি কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী দিঙ্কর বালা। ছবি: এখন টিভি

হাসপাতালটিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত ৩৭ জন রোগীর চিকিৎসা চলছে।

রোগীদের মধ্যে একজন জানান, আমি রাস্তা পার হয়ে অনেকটা গেছি তখনই আমাকে পেছন থেকে গুলি করে। গুলি সামনে দিয়ে বের হয়ে যায়।

রোগীদের মধ্যে আরো একজন জানান হঠাৎ ১০ থেকে ১২ জন উঠে মারা শুরু করে। পরে দেখি পায়ের হাড় ফেটে গেছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসা সেবা দিতে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন চীনের ১০ সদস্যদের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল। সোমবার রাজধানীর কয়েকটি হাসপাতালে রোগীদের পর্যব্ষেণ করেন তারা। সেই ধারবাহিকতায় মঙ্গলবার ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে গুরুতর রোগীদের সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন তারা । উন্নয়ন চিকিৎসা নিশ্চিতে সহযোগীতা করার প্রতিশ্রুতি দেন বিশেষজ্ঞ দল।

হাসপাতালটিতে ভর্তি থাকা রোগীদের কোন কোন ক্ষেত্রে বিদেশি এক্সপার্ট প্রয়োজন বলে জানালেন এ চিকিৎসক।

বার্ন এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ডা. বিধান সরকার বলেন, 'আমরা চামড়া লাগিয়েছি, ফ্লাপ কাভারেজ দিয়েছি । কিছু কিছু জায়গায় নার্ভ ইন্জুরি আছে সেটার ব্যাপারে হয়তো বিশেষজ্ঞ টিম লাগবে। কিন্তু আমাদের যে বিশেষজ্ঞ আছে বর্তমানে টা দিয়ে এই ক্ষত কাভারেজ সম্ভব।'

হাসপাতালের পরিচালক জানালেন, চীনা চিকিৎসকগণ পরিদর্শন শেষে প্রয়োজন সাপেক্ষে বাংলাদেশে আসতে আগ্রহী। আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতেও তৎপর তারা।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, চীন তো আমাদের থেকে এগিয়ে আছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজের কথা যদি বলি আমাদের এক্সপার্টরা কিন্তু এনাফ। আপনারা জানেন যে, ৯০০ রোগী আমরা এখানে ভর্তি করেছিলাম। বেশির ভাগই কিন্তু আমরা চিকিৎসা দিয়েছি। আর এখন মাত্র ৩৭ জন ভর্তি আছে। আর এই অবশিষ্ট রোগীদের চিকিৎসা কিন্তু আমাদের এক্সপার্টরাই দিচ্ছে।

বৈষম্যবি‌রোধী ছাত্র আন্দোল‌নের সময় গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের উন্নত চিকিৎসা দিতে রোববার ঢাকায় আসে চীনা মেডিকেল টিম। এর নেতৃত্ব দিচ্ছেন ডাক্তার ডং কুইআন।