উর্ধ্বমুখী ইলিশের দামের পালে নতুন হাওয়া লেগেছে ভারতে রপ্তানির ঘোষণায়। দেশের অন্যতম বড় ইলিশের পাইকারি বাজার চাঁদপুর বড় স্টেশন মাছ ঘাটে কেজি প্রতি মাছের দাম বেড়েছে ১শ' থেকে দেড়শ' টাকা। এমন পরিস্থিতিতে বাজারে মাছ কিনতে আসা ক্রেতাদের নাভিশ্বাস অবস্থা।
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আহসান উল্লাহ। বাজারে ঘুরে ঘুরে ইলিশ মাছ দেখছেন। কিন্তু দাম শোনার পর মলিন হচ্ছে হাসিমাখা মুখ। চাঁদপুর জেলার মানুষ হয়েও স্বাচ্ছন্দ্যে ইলিশ কিনতে না পেরে হতাশ তিনি।
ক্রেতা আহসান উল্লাহ বলেন, 'মাসের একটা খরচ থাকে। এখন আমি মাছ নিতে পারবো ব্যাপার না কিন্তু অন্য দিকে ঘাটতি পড়ে যাবে।'
চড়া দামের ইলিশ মাছের দাম আরও বেড়েছে রপ্তানির আদেশে। এতে করে দূর-দূরান্ত থেকে চাঁদপুরে ইলিশ কিনতে আসা ক্রেতারা হতাশ বাড়তি দাম শুনে।
ক্রেতাদের একজন বলেন, 'ফেনী থেকে আসছি মাছ কিনতে কিন্তু এখানে এসে দেখি ফেনীর থেকে এখানে মাছের দাম বেশি।'
আরেকজন বলেন, 'ইন্ডিয়াকে মাছ দেয়ার জন্য দাম ডাবল হয়ে গেছে।'
বাজারে দু'দিন আগেও এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হতো ১৭শ' টাকা দরে। তবে আজকের বাজারে তা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮শ' থেকে ১৮শ' ৫০ টাকায়। স্থানীয় পদ্মা ও মেঘনা নদীর ইলিশের চাহিদা বেশি থাকলেও সরবরাহ অনেক কম। অধিকাংশ মাছই আসছে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে। সরবরাহের তুলনায় চাহিদা ও দাম বাড়তি থাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের একজন বলেন, 'মাছ রপ্তানি ঘোষণার সাথে সাথে আমাদের এই আড়তে প্রতি মণ মাছ ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা মণে বেড়ে গেছে।'
আরেকজন বলেন, 'মাছ সংকটের কারণে দাম আগে থেকেই বাড়তি। সরবরাহ না বাড়লে চলতি বছর ইলিশের দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানান এই ব্যবসায়ী নেতা।'
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমবায় সমিতি সাধারণ সম্পাদক মো. শবে বরাত বলেন, 'রপ্তানির অনুমতি দেওয়ায় হয়তো ৫০ টাকা বাড়তে পারে কিন্তু আহামরি বাড়বে না। মাছের দাম এমনিতেই বেশি। ১৫ দিন পর মা ইলিশের অভিযান এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে। নদীতে মাছই নাই মাছ থাকলে অটো দাম কমে যাবে।'
বর্তমানে এক কেজি ওজনের ইলিশ ১৮শ' থেকে ১৮শ' ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত ২-৩ বছর আগেও এই বাজারে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ হাজার মণ ইলিশ সরবরাহ হলেও বর্তমানে তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪শ' থেকে ৫শ' মণে।