দেশে এখন
0

পাহাড়ে সহিংসতার পরও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বান্দরবানে

পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিচুক্তির ২৭ বছরে বান্দরবানে ঘটেনি কোনো ধরনের সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। সম্প্রতি সহিংসতার পর রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি অস্থিতিশীল হলেও বান্দরবানে রয়েছে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ।

রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান, এই তিন পার্বত্য জেলায় পাহাড়ি-বাঙালি মিলিয়ে অন্তত অসংখ্য জাতিগোষ্ঠীর বসবাস। বছরের পর বছর ধরে সংঘাত, সহিংসতা ও অসন্তোষের পর ১৯৯৭ সালে করা হয় পার্বত্য শান্তিচুক্তি। এরপরও মেটেনি বিভেদ, থামেনি সংঘাত।

সবশেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবার দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিকাণ্ডে রাঙামাটি-খাগড়াছড়িতে চারজন নিহত হন। আহত হন অনেকে। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের দুই জেলায়। তবে বান্দরবানে সম্প্রীতি বজায় রেখেছেন সব সম্প্রদায়ের মানুষ।

বান্দরবানের স্থানীয় একজন বলেন, ' আমরা বান্দরবানবাসী মনে করি আমাদের সম্প্রীতি বজায় থাকবে। এবং সামনেও এ ধরনের কোনো ঘটনা আমাদের বান্দরবানে হবে না বলে আমি আশা করছি।

অন্য একজন স্থানীয় বলেন, 'পাহাড়ি বাঙালিদের প্রতি আমাদের যে শান্তি, সম্প্রীতি, সহাবস্থান ছিল, সেটা থাকবে। আমরা সেভাবেই থাকতে চাই।'

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দাবি, ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বান্দরবানে অটুট রয়েছে শান্তি ও সম্প্রতি। আগামীতেও যেন এমন অবস্থা অটুট রাখতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান তাদের।

বান্দরবান দুর্নীতি দমন কমিশন ও মানবাধিকার কর্মী সভাপতি অংচমং মার্মা বলেন, 'আমরা কোনো সংঘর্ষ, কোনো হানাহানি চাই না। দীর্ঘদিন থেকে বলা হচ্ছে বান্দরবান জেলা হচ্ছে সম্প্রীতির জেলা। এই সুনামটা যেন রক্ষা থাকে আমরা এটা চাই।'

বান্দরবান সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের সভানেত্রী ডনাই প্রু নেলী বলেন, 'আমরা যার যার ধর্ম, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিকে আমরা লালন করি। পালন করি। আমরা বান্দরবানে রাঙামাটি-খাগড়াছড়ির মতো মারামারি-হানাহানি চাই না।

পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মজিবুর রহমান বলেন, 'যার যার বক্তব্য সরকারের কাছে উপস্থাপন করবো। আমাদের সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। মরা কখনও মারামারিতে যাবো না, এই রকম বোঝাপড়া আমাদের মাঝে আগে থেকেই ছিল।'

এদিকে, জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব পক্ষের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সভা করেছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা। যেখানে কোনো সহিংসতায় না জড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।

বান্দরবানের পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন বলেন, 'সম্প্রীতির বান্দরবান ধরে রাখার জন্য প্রশাসন সর্বদা সতর্ক অবস্থায় থাকে। এবং পাহাড়ি বাঙালিরা যেভাবে তাদের অনুষ্ঠান করতে চায়। সব অনুষ্ঠানে তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হয় প্রশাসন থেকে।'

বান্দরবান জেলায় বাস করে মারমা, চাকমা, ম্রো, ত্রিপুরা, লুসাই, খুমি, বোম, খেয়াং, চাক, পাংখো, তঞ্চঙ্গা ও বাঙালিসহ ১২টি জাতিগোষ্ঠী মানুষ।

এসএস