তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ, তিনি যেটা কালিমা হিসেবে জাতির কপালে লিখে দিতে চেয়েছিলেন, জাতি এটা তার দিকে ফিরিয়ে দিয়েছেন। এমন রাজনীতি করলেন, বললেন উন্নয়নের রাজপথে দেশকে উঠিয়ে দিয়েছেন। বললেন বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। এমন মডেল বানালেন, আর এমন রাজপথ তৈরি করলেন, গাড়িটা রাজপথ দিয়ে চালিয়ে আপনি যেতে পারলেন না। এমন রাজনীতি করলেন আপনাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হলো। সাড়ে ৮শ বছর আগে লক্ষণ সেন গিয়েছিলো, আর আপনি গেলেন তার পরে।’
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘আমাদের চরিত্রে কালিমা লেপন করা হয়েছে। আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদির মতো মানুষকে বলা হয়েছে তিনি ধর্ষক। তিনি খুনি, তিনি লুটতরাজ, তিনি অগ্নিসংযোগকারী। সময় বদলায়, পরিবেশ বদলায়। সত্যকে চাপা দিয়ে রাখা যায় না। সত্য মাটির নিচ থেকে উঠে আসে।’
জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, ‘এভাবে নির্যাতন করা হয়েছে বিএনপির নেতাকর্মীদের উপর, নির্যাতন করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের উপর, নির্যাতন করা হয়েছে গণ অধিকার পরিষদের উপর, নির্যাতন করা হয়েছে সাধারণ মানুষের উপর। হত্যা করা হয়েছে সাংবাদিক বন্ধুদের। কালো আইনে টেনে হিঁচড়ে নেয়া হয়েছে তাদের জেলে। তারা কাউকে বাদ দেয়নি। সবাইকে নিষিদ্ধ নিষিদ্ধ। সবাই রাজাকার।’
আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করতে হাজার খানেকের মতো আমাদের কলিজার টুকরারা জীবন দিয়েছেন। এখানে কোন দলমত নাই। এখানে কোন ধর্ম নাই। এখানে সকল ধর্মের মানুষ অংশ গ্রহণ করেছেন, সকল ধর্মের মানুষই মারা গিয়েছেন। নিহত হয়েছে, আহত হয়েছে।’
জামায়াতের আমির বলেন, ‘শহীদদের আমরা কোনো দলের সম্পত্তি বানাতে চাই না। এই শহীদরা জাতির সম্পদ, এই শহীদরা আমাদের শ্রদ্ধার পাত্র। এই শহীদরা আজীবন জাতীয় বীর। আমরা তাদের সেই মর্যাদায় দেখতে চাই। যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের নিয়ে কোন দল যেন ক্রেডিট নেয়ার চেষ্টা না করি। এটা আমাদের সকলের ত্যাগের ফসল। তাহলে সকলের প্রতি সম্মান দেখানো হবে।’
আহতদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আহতদের পাশে যাবেন। তাদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করবেন। আমরা চেষ্টা করছি, যাদের চিকিৎসা দেশে সম্ভব নয়, তাদেরকে একটু উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হবে। দুই একটা দেশের সাথে আমরা আলাপ আলোচনা করেছি। তারা আগ্রহ দেখিয়েছেন।’
সাংবাদিকদের নির্যাতন নিয়ে তিনি বলেন, ‘যে সাংবাদিক ভাই বিদেশে বসে অন্যায়, জুলুমের বিরুদ্ধে কথা বলেছেন দেশের তার পরিবারের কোনো বোনকে টেনে নিয়ে টানা হেঁচড়া করা হয়েছে। কোন ভাই ফেসবুকে কিছু লিখলে, আজরাইল রূপি ডিবি তার ঘরে গিয়েছে। তাদের হেনস্তা করা হয়েছে।’
জেলা জামায়াতে ইসলামের আমির আহসান হাবিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য অধ্যক্ষ মো. ইজ্জত উল্লাহ ও ড. মাওলানা খলিলুর রহমান মাদানী।
এতে বক্তব্য রাখেন ধনবাড়ীর নিহত একরামুল হক সাজিদের পিতা জিয়াউল হক, সৈয়দা আক্তার, জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারী মনিরুল ইসলাম, জেলা শিবিরের সভাপতি আনোয়ার হোসেন মতিউল্লাহ, শহর শিবিরি সভাপতি মামুন আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
এসময় বিভিন্ন উপজেলা জামায়াত ও শিবারের ছয় সহস্রাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। শেষে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনা করে দোয়া করেন জামায়াতে ইসলামের আমির ডা. মো. শফিকুর রহমান।