মানুষের ভিড়ে আবারও মুখর হতে শুরু করেছে রেল স্টেশনগুলো। ২৬ দিন থমথমে থাকার পর ট্রেন স্টেশন আবারও ভিড় করছেন যাত্রীরা। রেল লাইনের পাতে আবারও ঘুরছে চাকা।
আজ সকাল থেকে শুরু হয়েছে স্বল্প দূরত্বের মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চলাচল। সময় মেনে ছেড়েছে প্রতিটি ট্রেন। ২৬ জোড়া করে ট্রেন চলাচল করবে বুধবার পর্যন্ত। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ট্রেনের খোঁজে স্বল্প দূরত্ব যাত্রীরা ভিড় করেন কমলাপুর রেল স্টেশনে।
যাত্রীদের মধ্যে বেশিরভাগই চাকুরীজীবি, নিয়মিত যাতায়াত করেন এই পথে। তাদের একজন তামিম খান। অনেকদিন পর ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় খুশি তিনি।
যাত্রীদের একজন বলেন, 'এয়ারপোর্টে আমার অফিস। বাসের থেকে ট্রেনে এসে অফিস করলে ভোগান্তি কমে।'
কোটা সংস্কার আন্দোলন সংঘাতে রূপ নিলে গত ১৮ জুলাই ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এরপর আবার স্বল্প দূরত্বে মেইল, লোকাল ও কমিউটার ট্রেন চালু করা হয়েছিল। কিন্তু ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে থেকে দেশব্যাপী অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণা দিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। সকাল থেকে ট্রেন চালু হওয়ায় বাস যাত্রায় চাপ কমবে বলে মনে করেন যাত্রীরা।
আরেকজন যাত্রী বলেন, 'অনেকদিন ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। ট্রেন থাকলে আমাদের কর্মস্থলে যেতে সুবিধা হয়।'
রেল খাতে সংস্কার করার কথা জানান কমলাপুর রেলস্টেশনে স্টেশন মাস্টার। সময় মেনে ছাড়বে গাড়ি, জনবান্ধব হবে রেলযাত্রা।
কমলাপুর রেলওয়ের স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন, 'গতকাল থেকেই আমাদের মালবাহী গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। আজ থেকে লোকাল ট্রেন চলাচল শুরু করেছে। আগামী ১৫ আগস্ট থেকে আন্ত:নগর ট্রেন চলাচল শুরু করবে।'
আগামী বৃহস্পতিবার থেকে আন্ত:নগর ট্রেন চলাচল করবে। এ সময় প্রতিদিন ৪০০টির মতো যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে। এর মধ্যে ভারত বাংলাদেশের আন্তদেশীয় ট্রেনগুলো চলাচলে এখনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি।
এদিকে, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও সৈয়দপুরসহ থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে বেশিরভাগ ট্রেন ছেড়েছে শিডিউল অনুযায়ী। এতে অফিসগামীসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়া যাত্রীদের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। নিরাপদ ও আরামদায়ক এ বাহনের চলাচল শুরু হওয়ায় খুশি যাত্রীরা।
ময়মনসিংহ জংশন থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যায় বেশ কয়েকটি ট্রেন। রেল চলাচল শুরু হওয়ায় সরব হয়ে ওঠে প্ল্যাটফর্মসহ স্টেশন এলাকা। বেশ কিছুদিন পর ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ায় কাউন্টারেও ছিলো ভিড়। ঢাকাগামী ও অফিসগামী যাত্রীদের মনে ফিরেছে স্বস্তি।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে চাঁদপুরগামী সাগরিকা এক্সপ্রেস কমিউটার ট্রেনটির যাত্রার মধ্যে দিয়ে বিরতি ভেঙে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তবে, প্রথম দিন হওয়ায় অন্য সময়ের তুলনায় যাত্রীর চাপ ছিলো কম। ট্রেনে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারায় সন্তোষ প্রকাশ করেন যাত্রীরা।