শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশ ছাড়ার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে দেখা দিয়েছে সংকট। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনে মাধ্যমে সেই সংকট থেকে উত্তরনে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্তকে ইতিমধ্যে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশ।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ড. আলী রীয়াজের মতে, এই অবস্থা থেকে বের হওয়ার জন্য তরুণ সমাজকে বিবেচনায় রাখতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতি একটা বড় রকমের পরিবর্তনের সম্ভাবনার মুখে দাঁড়িয়েছে। তরুণ নেতৃত্বের যে উত্থান ঘটেছে সেটি অতীতে ঘটেনি। এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই বলেও মনে করেন তিনি।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, 'বাংলাদেশের প্রচলিত রাজনীতিতে যেসমস্ত শক্তিগুলো আছে, তাদের যেমন ভূমিকা আছে, কিন্তু তাদের থেকে বড় ভূমিকা নিয়ে একটা নতুন শক্তির আবির্ভাব ঘটেছে। এছাড়া গত ১৫ বছর হলে বাংলাদেশ যে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার মধ্যে প্রবেশ করেছিল, সেটা যে কেবলমাত্র রাজনৈতিক কাঠামোকে প্রভাব ফেলেছে তা না। বাংলাদেশের রাষ্ট্রের কাঠামোকেই আসলে বদলে দিয়েছে। ভাবমূর্তি নিয়ে চিন্তিত হওয়ার চেয়ে চিন্তিত হওয়া দরকার যে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করে কেউ কেই সুবিধা নিতে পারে।'
প্রতিবেশি দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক সমতা এবং সম্মানের ভিত্তিতে হওয়া জরুরি বলে মনে করেন এই আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক। অতীত সম্পর্কের ইতিহাস ভুলে নতুন করে কূটনৈতিক উদ্যোগ নিতে হবে। এক্ষেত্রে নিজেদের ফায়দার জন্য ভারতকেই এগিয়ে আসতে হবে।
ড. আলী রীয়াজ বলেন, 'যেনতেন প্রকারে জোড়াতালি দিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি খারাপ হবে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা ভাবতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করতে হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক আসলে একপাক্ষিক ছিল। ক্ষমতায় যারা ছিলেন তারা ভারতের ওপর রাজনৈতিক কারণে নির্ভর করেছিলেন। অন্যদিকে ভারত অর্থনৈতিক এবং ভূরাজনৈতিকভাবে সুবিধা নিয়েছেন।'
কোটা সংস্কার আন্দোলনের মাধ্যমে দীর্ঘ ১৬ বছর পর রাজনৈতিক পালাবদল দেখলো বাংলাদেশ। দমন-পীড়ন-নির্যাতন, ও রাজনৈতিক সহিংসতায় এ আন্দোলনে প্রাণহানি ৪০০ ছাড়িয়েছে।