বগুড়া স্টেশনে একটি ট্রেন প্রবেশ করলে আরেকটি ট্রেন ক্রসিংয়ের জন্য ব্যবহার করে এক নম্বর লুপ লাইন। প্রতিদিন তিন থেকে চার বার এই লুপ লাইন ব্যবহার করে ক্রসিং করে লোকাল ও বিভিন্ন আন্তঃনগর ট্রেন।
লুপ লাইনটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও লাইনের অধিকাংশ কাঠের স্লিপার দেবে গেছে মাটির নিচে। লাইনে নেই ব্যালাস্টের কোন চিহ্ন, রেল লাইন ধরে রাখার শক্তি-সামর্থ্য প্রায় হারিয়েছে মরিচা ধরে জরাজীর্ণ স্লিপারের বেশিরভাগ পিন। বগুড়া রেল স্টেশন সেকশনের মধ্যেই লাইন বরাবর সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় ঢেউ। গোটা লুপ লাইনজুড়ে বালাই নেই পাথরের।
স্থানীয়রা বলেন, ১০০ বছর আগের কাঠ মাটির নিচে পড়ে আছে। এটার উপর দিয়েই ট্রেন চলছে। এতে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। রেল লাইনে পাথর নাই, কাঠ নষ্ট হয়ে গেছে, নাট-বল্টুও নাই। নিরাপত্তার জন্য রেল স্লিপারে পাথর অত্যন্ত জরুরি। এতে যাত্রীরা অনেক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
লাইনের কোন কোন এলাকায় সংস্কার কাজ করতে দেখা যায় রেল কর্মচারিদের। এসময় কর্মচারিরা জানান, প্রায় ৭৫ ভাগ কাঠের স্লিপার পচে গেছে। মরিচা ধরে নষ্ট হয়েছে অনেক নাট-বল্টু। বেছে বেছে একেবারে পচা কিছু স্লিপার পরিবর্তন করা হলেও সেখানে আবার কাঠের পুরনো স্লিপার বসাতে দেখা যায়।
এক রেল কর্মচারি বলেন, 'পুরাতন স্লিপারগুলো পরিবর্তন করে দিতেছি। প্রায় ৭৫ শতাংশ স্লিপার ভেঙে গেছে।'
ট্রেন চলাচলের জন্য রেল লাইনটি মোটেও নিরাপদ নয় বলে প্রকৌশল বিভাগকে পত্র দেয়ার দুই বছর পরেও কেন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, এমন প্রশ্নের উত্তরে সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান জানান বাজেটের অভাবে কাজ করা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, 'আমাদের প্রধান প্রকৌশলী কয়েকদিন আগে ঘুরে গেছে। আমরা পর্যায়ক্রমে স্লিপারগুলো সব পরিবর্তন করবো। আমরা বরাদ্দ চেয়েছি কিন্তু টাকার কারণে পাশ হয় নাই।'
এদিকে সম্প্রতি এক সপ্তাহের ব্যবধানে বগুড়ার গাবতলী, সুখানপুকুর ও কাহালুতে তিনবার ট্রেন লাইনচ্যুত হবার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের কোন অগ্রগতি জানায়নি কর্তৃপক্ষ।