চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট ফ্লাইওভার ধসের ১২ বছর পর রায়। আদালতে উপস্থিত হন অভিযুক্ত আট আসামীর সবাই। জনাকীর্ণ আদালতে রায় ঘোষণা করেন চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল ইসলাম ভুইয়া।
আদলতের পর্যবেক্ষণ, ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় নির্মাণস্থলে পর্যাপ্ত আলো না থাকা, নিরাপত্তার অভাব, সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড না থাকায় এতো বড় দুর্ঘটনায় প্রায় ৫০ জন হতাহত হয়েছেন। কাজে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতির অভাব, অভিজ্ঞ ইন্জিনিয়ার না থাকা, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর আক্তার পারিসা ও নজরদারি সংস্থা সিডিএর দায়িত্বশীলতার অভাবকেও দায়ী করেন আদালত। অভিযুক্ত আট আসামীর সবাই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী। দায়িত্বে গাফিলতিতে প্রাণহানির দায়ে সবাইকে ৭ বছর কারাদণ্ড ও ৩ লাখ টাকা জরিমানা করে আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অনুপম চক্রবর্তী বলেন, 'আদালত দুইটা সাক্ষ্য পর্যালোচনা করে যে রায়টা বিশ্লেষণ করে দিয়েছেন তা ঐতিহাসিক। শুধু চট্টগ্রামের জন্য না সারা বাংলাদেশের জন্য ইতিহাস হয়ে থাকবে।'
আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, নির্মাণ কাজে সতর্কতার অভাব ও গাফিলতির জন্য সারাদেশে এমন প্রাণহানি হচ্ছে। এ রায় দেশের সার্বিক যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে বিপর্যয়ের উদাহরণ হিসেবে থাকবে। যাতে ভবিষ্যৎ এ সবাই সতর্ক হতে পারেন।
রায়ে অসন্তুষ্ট আসামীপক্ষ উচ্চ আদালতে যাওয়ার ঘোষণা দেন। তাদের মতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক, সিডিএ সবাই দায়ী। রায়ে সাজা হয়েছে শুধুমাত্র কর্মকর্তা, কর্মচারীদের।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মনজির আহমেদ আনসারী বলেন, 'আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবো।'
২০১২ সালে করা এ মামলায় ২২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছে আদালত। আসামি পক্ষে সাক্ষী দিয়েছেন ৭ জন। মামলায় ২৫ জনকে আসামি করা হলেও, পরে সিডিএ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকপক্ষ বাদ দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৮ জনকে আসামি করে চাজর্শিট দেয় পুলিশ।