দেশে এখন
0

‘তিন নম্বর প্রশ্ন রাত্রে কীভাবে যাবে, এটা আল্লাহ ছাড়া কারো জানা সম্ভব না’

বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) অধীনে অনুষ্ঠিত সরকারি চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস নিয়ে দেশজুড়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এরই মাঝে প্রশ্নফাঁসের সুযোগ নেই বলে দাবি করলেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন দাবি করলেন। তিনি বলেন, ‘একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কারো পক্ষে জানা সম্ভব না। লটারির আগে যে তিন নম্বর প্রশ্ন উঠবে, এটা কারো পক্ষে জানার কথা না।'

আজ (মঙ্গলবার, ৯ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁও কর্ম কমিশন ভবনে প্রশ্নফাঁস নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিসিএসসহ বাংলাদেশ কর্ম কমিশনের অধীনে থাকা ৩০টি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে ড্রাইভার আবেদ আলীসহ ৭ জন। যদিও প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার সুযোগ কম এমন দাবি করেছেন পিএসি চেয়ারম্যান। এছাড়া ফাঁসকৃত প্রশ্ন পেয়ে যাদের চাকরি হয়েছে তাদের খুঁজে বের করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না সে ব্যাপারেও কিছু জানাতে পারেননি তিনি। এদিকে রেলের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের দায়ে গ্রেপ্তারকৃত ৫ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পিএসসি। 

রেলের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণ পেয়ে ২ জন সহকারী পরিচালক, আলোচিত ড্রাইভার আবেদ আলি সহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

এ ঘটনায় শুরু হয় তোলপাড়। প্রশ্ন ওঠে বিগত এক যুগে পিএসসির অন্তত ৩০ টি চাকরির পরীক্ষায় নিয়োগ পাওয়া অধিকাংশের যোগ্যতা নিয়ে।

দেশকে মেধাশূন্য করতে কারা আঁকছে নীল নকশা তাদের খুঁজে বের করার দাবি তোলে চাকরি প্রার্থীরা। রেলওয়ের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে সকালে পিএসসির সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে ক্ষুব্ধরা।

৫ জুলাই অনুষ্ঠিত রেলওয়ের নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল হবে কি না সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি পিএসসি। অবশ্য প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার সুযোগ কম বলে মন্তব্য করেছেন পিএসসি চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন।

পিএসি চেয়ারম্যান বলেন, 'লটারিটা করি সাফেল আকারে। এটা একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কারো পক্ষে জানা সম্ভব না। লটারির আগে এর যে তিন নম্বর প্রশ্ন উঠবে এইটা কারো পক্ষে জানার কথা না। এই তিন নাম্বার প্রশ্ন রাত্রে কীভাবে যাবে। গেলে তো চারটায় যেতে হবে তিন নম্বর প্রশ্নপত্র কীভাবে যাবে। যেটা আল্লাহ ছাড়া কারো জানা সম্ভব না।'

১২ বছর ধরে এই চক্রের ফাঁস করা প্রশ্ন পেয়ে যারা চাকরি পেয়েছেন তাদের ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কি পদক্ষেপ নেবে সে প্রশ্নের জবাবে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, তিনি নিজেই এ ব্যাপারে কি পদক্ষেপ নেবেন তা নিয়ে সন্দিহান।

চেয়ারম্যান বলেন, 'কোনো অপরাধ যদি প্রমাণ হয় ও সেটি যদি পিএসসির একতিয়ারভুক্ত হয় তাহলে আইনের যে ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে তার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিবে। আমাদের তদন্তে মধ্যে হবুহু রিপোর্ট কোট আনকোট করে দেয়া হয়েছে।' 

সিআইডির হাতে গ্রেপ্তার ১৭ জনকে নিম্ন আদালতে তোলা হয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জন নিজের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।

দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়ার পরও আসামিপক্ষের আইনজীবীদের দাবি প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত নয় আটককৃতরা। এই ঘটনার পেছনে আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ বলেন,'যেহেতু মিডিয়াতে নিউজ এসেছে তাহলে একটা মামলা না করলে কেমন হয়। এজন্যই আমাদের নিরীহ আসামিদেরকে ধরে এনে মামলা দিয়েছে।'

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. হেমায়েত উদ্দিন খান বলেন, 'ঘটনার পেছনে আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরও খুঁজে বের করে গ্রেপ্তার করা হয় তাহলে পিএসসি তার সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে পারবে।'

শুধু পিএসসি নয় সব ধরনের নিয়োগ পরীক্ষা ত্রুটিমুক্ত করতে দাবি উঠেছে সবমহলে থেকেই।

ইএ