পাহাড়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সারা বছরই পর্যটকের ভিড় লেগে থাকে বান্দরবানের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানগুলোতে। ঈদের টানা ছুটিতে এ ভিড় বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ। হোটেল, মোটেল রিসোর্টগুলো থাকে কানায় কানায় পরিপূর্ণ। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চাঁদের গাড়িতে করে পরিবার-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব নিয়ে পর্যটকরা ঘুরে বেড়ায় এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে।
পর্যটকের পদচারণায় একদিকে যেমন সরব হয়ে উঠে পর্যটন স্পটগুলো, তেমনি সচল হয় পর্যটন শিল্পের চাকা। কিন্তু এ বছর পাহাড়ের অস্থিতিশীল পরিবেশ ও যৌথ অভিযানের কারণে ঈদের টানা ছুটিতেও পর্যটক নেই পাহাড় কন্যা বান্দরবানে। ঈদের ভরা মৌসুমেও পর্যটক না আসায় হতাশ পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
হোটেল গ্র্যান্ড ভ্যালীর ম্যানেজার ইসমাইল হোসেন সুমন বলেন, 'টানা ছুটিতে পর্যটকের আগাম বুকিং থাকতো কিন্তু গতি কয়েক বছর ধরে কেএনএফ এর সমস্যার কারণে পর্যটকের আগমন একেবারেই কমে গেছে। কারণ মানুষ যেসব এলাকা ভ্রমণে যেতে চায় সেখানে অভিযান চলছে তাই নিরাপত্তার ভয়ে সেখানে যেতে পারছে না। কেউ কেউ ঘুরতে আসে দিনে এসে দিনে চলে যায়।'
পরিবহণ শ্রমিক নেতা বাহাদুর বলেন, 'পর্যটকের পরিবহনের জন্য ৪ শতাধিক চাঁদের গাড়ি রয়েছে। পর্যটক না আসায় তারা সবাই বেকার হয়ে পড়েছে। গত দুই ঈদেও একই অবস্থা। এবারও তেমন একটা বুকিং নেই পর্যটক ও আসছে না। তাই অনেকে পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে গেছে।'
এদিকে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে হোটেল-মোটেল রিসোর্টগুলোতে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন ধরনের অফার। ৩০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত চলছে এ অফার কিন্তু তারপরও পর্যটকের সাড়া মিলছে না।
হোটেল মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, 'পাহাড়ের পর্যটন দিন দিন অধঃপতনের দিকে যাচ্ছে। ঋণগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা খুব বিপদে আছে। পর্যটক না আসায় ব্যবসা পরিচালনা করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। অনেকে স্টাফ ছাঁটাই করে দিয়েছে অনেকে হোটেল বন্ধ করে দেয়ার উপক্রম হয়েছে। পাহাড়ের নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এ শিল্প একেবারে ধ্বংস হয়ে যাবে।'
উল্লেখ্য জেলায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ২০ হাজারের বেশি মানুষ পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িত এবং জেলায় পর্যটকদের জন্য গড়ে উঠেছে ছোট বড় শতাধিক হোটেল-মোটেল রিসোর্ট।