জিরানী খালের বাসাবো এলাকায় খাল পরিষ্কার পরিচ্ছন্নের কাজ চলছে৷ ময়লা আবর্জনার ভারে পানি প্রবাহের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মশার উপস্থিতি বেশ ভালো করেই টের পাচ্ছে এলাকাবাসী।
সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে খালের পাশে থাকা দোকানিরা আর খালের ধার ঘেঁষা বাসা বাড়ির লোকজন। বৃষ্টির পর সপ্তাহখানেক ধরেই মশার উৎপাত বাড়ায় কয়েল বা ওডোমস দিয়েও রক্ষা পাচ্ছেন না তারা। সিটি করপোরেশনের মশার ওষুধ অকার্যকর বলে দাবি তাদের।
স্থানীয় একজন বাসিন্দা বলেন, 'সিটি করপোরেশন ওষুধ দেয়, কিন্তু তারপর খালের মশাগুলো ওপরে চলে আসে। ওষুধ দেয়ার ফলে মশা মরে না।'
শুধু বাসা বাড়ি নয় খালের পাশের স্কুলেও মশার কারণে ব্যাহত হচ্ছে বাচ্চাদের পড়াশোনাও। প্রতিবছরই এই এলাকার স্কুলগুলোতে ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে থাকে শিক্ষার্থীরা। মশা থেকে রক্ষা পেতে ক্লাসগুলোতে কয়েল ব্যবহার করে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
একজন শিক্ষার্থী বলেন, 'শেষ কয়দিনে বৃষ্টি হওয়াতে অনেক মশা বেড়েছে, স্কুলে মশা বাড়লে স্যাররা আমাদের কয়েল দিয়ে দেয়।'
বৃষ্টির পর পরই এক সপ্তাহের ব্যবধানে এইসব এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে তার প্রমাণ মিলে রাজধানীর মুগদা হাসপাতালে। মুগদা হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেলো ভর্তি রোগীর বেশিরভাগই বাসাবো আর মাদারটেক এলাকার৷ রোগীর স্বজনরা বলছেন এ বছর ডেঙ্গু মৌসুম আসার আগেই এসব এলাকায় আক্রান্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে।
হাসপাতালটির পরিচালক ডা. নিয়াতুজ্জামান বললেন এ বছর ডেঙ্গুর ধরণ পাল্টেছে। নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া বা অন্য উপসর্গ নিয়ে আসা রোগীদের রক্ত পরীক্ষার পর ধরা পড়ছে ডেঙ্গু। বুঝতে না পারা এবং সঠিক সময়ে হাসপাতালে না আসায় একাধিকবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীরা আছেন মৃত্যুঝুঁকিতে।
ডা. নিয়াতুজ্জামান বলেন, 'ক্লাসিক ডেঙ্গুর লক্ষণ নিয়ে খুব কম রোগী আসে। কারও কারও জ্বর ছিল, কেউ ডায়রিয়া নিয়ে আসছে। ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণ না হলে পরীক্ষা করে দেখা যায় ডেঙ্গু। অনেকে দ্বিতীয় বা তৃতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার জন্য ক্লাসিক ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না।'
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩ হাজার আর মৃত্যু হয়েছে ৩৭ জনের।