চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে প্রায় পৌনে ৩ হাজার মানুষ। আর প্রাণ হারিয়েছেন ৩৪ জন। যেখানে গত বছরের ২৭ মে পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছিল ১ হাজার ৭০৪ জন আর মৃত্যু হয়েছিল ১৩ জনের। এই পরিসংখ্যানই বলছে এবারের ডেঙ্গু কতটা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
এরই মধ্যে এডিসের প্রাক মৌসুম জরিপ প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ঢাকার দুই সিটির ৯৯টি ওয়ার্ডের ৩ হাজার ১৪৯টি বাসায় জরিপ চালিয়ে দেখা যায়, শতকরা ১৫ শতাংশ বাড়িতে এডিসের লার্ভা ও পিউপার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। মিরপুর, বনানি, নিকেতন, হাতিরঝিল, মোহাম্মদপুর, খিলখেত, মালিবাগসহ গতবারের ঝুকিঁপূর্ণ ওয়ার্ডগুলোই সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। আশঙ্কার খবর হলো, বরাবরের মতো এডিসের ঘনত্ব সর্বোচ্চ ৪২.৩৩ শতাংশ পাওয়া গেছে বহুতল ভবনে। এরপরই স্বতন্ত্র বাড়ি ও নির্মাণাধীন ভবনে লার্ভার হার ২১.৬ শতাংশ। এছাড়াও ঢাকা দক্ষিণের ১৬.৩৯ শতাংশ এবং ঢাকা দক্ষিণের ১৪.৩০ শতাংশ পরিত্যক্ত পাত্রে মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ পরিচালক অধ্যাপক ডা. শেখ দাউদ আদনান বলেন, 'বহুতল ভবনে লার্ভার হার সর্বোচ্চ পাওয়া গিয়েছে। মশার লার্ভা দ্বারা সংক্রমিত।'
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যেই হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঢাকায় চিকিৎসা নিতে এসে প্রাণহানি বাড়ায় এবার স্ব স্ব জেলায় চিকিৎসা নেবার অনুরোধ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি প্রাণহানি এড়াতে বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকদের সমন্বিত চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, 'বাচ্চাদের জন্য আলাদা চিকিৎসা সেবা এবং গতবারের অভিজ্ঞতা নিয়ে এবার নতুনভাবে সেবা দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
শুধু চিকিৎসা নিশ্চিত করে প্রাণহানি ঠেকানো সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে নাগরিকের জনসচেতনতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় করে সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে একসঙ্গে কাজ করা আহ্বান তাদের।
২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত মৌসুম পূর্ব জরিপে উভয় সিটি করপোরেশনে এডিসের লার্ভার উপস্থিতি প্রতি বছর বেড়েছে। তাই লক্ষণ প্রকাশ পেলেই সময়নষ্ট না করে হাসপাতালে আসার পাশাপাশি আগে এক বা একাধিকবার আক্রান্তদের সর্বোচ্চ সতর্কতা মেনে চলার আহ্বান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের।