রাজধানীর মান্ডা এলাকার খাল হুট করে দেখলে বোঝার উপায় নেই খাল নাকি সবুজ মাঠ! অথচ ঢাকা দক্ষিণে প্রধান পাঁচটি খালের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড় খাল। আগাছা আর ময়লা আবর্জনার ভারে স্থানীয়রা এটিকে মরা খাল বলে।
অথচ মান্ডা খালের প্রস্থ ১২ ফুট কোথাও কোথাও ৫০ ফুট। মানিকনগর থেকে খালের শুরু। এরপর উত্তর মান্ডা, সুখনগর, শেখের জায়গা , খিলগাওয়ের ত্রিমোহীনি হয়ে বালু নদে গিয়ে মিশেছে।
বর্ষার সময় সাড়ে আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ খালসহ জিরানী, কালুনগর আর শ্যামপুর খাল হয়েই মানিকনগর, মান্ডাসহ বেশ কিছু এলাকার বৃষ্টির পানি বালু নদী হয়ে বুড়িগঙ্গা নদীতে পড়ে। এই চারখালের বর্জ্য ও পলি অপসারণের পাশাপাশি সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয় ২০২২ সালের অক্টোবরে।
গত দেড়বছর ধরে চার খালের বর্জ্য অপসারণ কাজ বন্ধ রাখায় গত বছর প্রবল বৃষ্টিতে অন্তত ৬ বার ডুবেছিলো ঢাকা। অল্প বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা হওয়ায় এলাকাবাসীর দুর্ভোগ চরমে ওঠে।
মান্ডা খাল খনন কাজ উদ্বোধন করেন দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস। ছবি: এখন টিভি
স্থানীয়না বলেন, খাল যদি পরিপূর্ণভাবে উদ্ধার হয় তাহলে অনেক মানুষ উপকৃত হবে। অল্প বৃষ্টিতেই পানি উঠে যায়। মশা-পোকা মাকরের অত্যাচার অনেক বেড়ে যায়। খাল খনন হলে মানুষ অনেক সুবিধা পাবে, খাল দিয়ে পানি চলে গেলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে না।
বুধবার (৮ মে) সকালে মান্ডা খাল পুনরুদ্ধার ও নান্দনিক পরিবেশ সৃষ্টির কাজের উদ্বোধন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
প্রায় ৯০০ কোটি টাকার প্রকল্পের জিরানী, মান্ডা, কালু নগর ও শ্যামপুর এই চার খালের সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ শুরু হয়েছে যার মধ্যে শুধু মান্ডা খালের জন্যই বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৪০০ কোটি টাকা। ঢাকা শহরকে সবুজায়ন আর নান্দনিক করতে এ প্রকল্পের মাধ্যমে খালের পাশে প্রায় ৩৫ হাজার গাছ রোপন করবে দক্ষিণ সিটি।
শেখ তাপস বলেন, 'আন্তর্জাতিক মানদন্ডে ঢাকা শহরের সবুজায়নের যে প্রয়োজন তা আমরা এখন পর্যন্ত পূরণ করতে পারিনি। এ প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা প্রায় ৩৫ হাজার গাছ রোপন করবো। এতে সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি শহরের বনায়নের কার্যক্রম আরও বেগবান হবে।'
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে ঢাকা ওয়াসার কাছ থেকে ৭টি খালের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পায় দক্ষিণ সিটি। এই সাত খালের তিনটি আবার বক্স কালভার্ট। আর ঢাকা উত্তর সিটি ২৯টি খালের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পায়।