দেশে এখন

উদ্বোধনের ৫ মাসেও শেষ হয়নি চিলাহাটি স্টেশনের কাজ

উদ্বোধনের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো শেষ হয়নি নীলফামারীর চিলাহাটি স্টেশনের আইকনিক ভবনের কাজ। নির্বাচনের আগে গেলো ৪ নভেম্বর এর উদ্বোধন করেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। ভবনের কাজ শেষ না হওয়ায় শুরু করা যাচ্ছে না চিলাহাটি-হলদিবাড়ি সীমান্তের ইমিগ্রেশনের কাজও।

গত বছর ৪ নভেম্বর যখন এই আইকনিক ভবনটি উদ্বোধন হয়, তখন বলা হয়েছিলো ৯০ ভাগ কাজ শেষ। কিন্তু পাঁচ মাসেও শেষ হয়নি ১০ ভাগ কাজ। সরেজমিনে দেখা যায়, এখনো বাকি অনেক কাজ। রং করা, টাইলস বসানো, চারপাশের গ্লাস, টয়লেট ও বিশ্রামাগার প্রস্তুত করাসহ বেশকিছু কাজ এখনও অসম্পূর্ণ।

পাঁচ মাস ধরে আশার জাল বুনলেও সেই আশা কবে বাস্তবে রূপ নেবে; তা জানা নেই স্থানীয় বাসিন্দাদের। ঢাকা থেকে ভারতের শিলিগুঁড়ি পর্যন্ত মিতালী এক্সপ্রেস চালু হলেও ইমিগ্রেশন না থাকায় এর সুবিধা পাচ্ছে না উত্তরের মানুষ। নতুন এই আইকনিক ভবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে যাচ্ছে ইমিগ্রেশন। এখানে ইমিগ্রেশন চালু হলে সর্বোচ্চ ৩০ মিনিটের মধ্যে রেলপথে ভারতের শিলিগুঁড়ি যেতে পারবে উত্তরাঞ্চল, বিশেষ করে নীলফামারী, পঞ্চগড়, দিনাজপুর, রংপুরের যাত্রীরা। কিন্তু ভবনের কাজের গতিতে হতাশা বাড়ছে স্থানীয়দের।

স্থানীয়রা বলেন, অনেক দিন ধরেই কাজ চলছে। আমরা চাই দ্রুতই কাজ শেষ হোক। এখানে টিকিট কাউন্টার হোক। এখান থেকে যদি আমরা যেতে পারি তাহলে আমাদের খুব সুবিধা হবে।

চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেল যোগাযোগ পুনঃস্থাপনের আলোচনার সময় ২০১৯ সালের জুনে শুরু হয় পুরো স্টেশন আধুনিকায়নের কাজ। পরে করোনা মহামারি ও নকশা পরিবর্তনের কারণে প্রায় দু'বছর বন্ধ থাকে নির্মাণ কাজ। নকশা সংশোধন করে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক স্টেশনের আদলে আইকনিক ভবন নির্মাণ শুরু হয় ২০২১ সালে।

আধুনিক যাত্রীসুবিধার সব উপকরণই থাকছে এই স্টেশনে। টিকিট কাউন্টার, প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর বিশ্রামাগারের পাশাপাশি থাকবে রেলের কার্যক্রম চালানোর জন্য বিভিন্ন বিভাগের অফিস। দোতলায় ও তিনতলায় থাকবে ব্যাংক ও রেস্টুরেন্ট। অভ্যন্তরীণ যাত্রীদের জন্যেও থাকবে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা।

চিলাহাটি স্টেশন মাস্টার রুহুল আমিন বলেন, 'টিকিটের ব্যবস্থা এই কাউন্টার থেকেই হবে। টিকিট নিয়ে তারা এখানে অবস্থান করতে পারবে। ফাস্টফুড কর্নার ও তিন তলায় ভোজনালয় ব্যবস্থা থাকবে।'

তবে ভবনের কাজ নিয়ে যেন মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা। প্রকল্প পরিচালককে অনেকবার চেষ্টা করেও ফোনে পাওয়া যায়নি। জেলা প্রশাসক দাবি করেছেন জুনের মধ্যে শেষ হবে ভবনের কাজ। যদিও বাস্তবতা দেখে তা বিশ্বাস করা কঠিন।

জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, 'আশা করছি জুনের মধ্যে অবশিষ্ট কাজটি শেষ হবে। ইমিগ্রেশন চালু করতে হলে কাস্টমস ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার দরকার হবে। সেক্ষেত্রে সকল মন্ত্রণালয়ের সমন্বিতভাবে উদ্যোগ নিয়ে কাজটি করতে হবে।'

২০২০ সালের ডিসেম্বরে প্রায় ৫৫ বছর পর এই রুটে রেলযোগাযোগ পুনঃস্থাপিত হয়। শুরুতে মালবাহী ট্রেন চললেও ২০২২ এর জুনে চালু হয় যাত্রীবাহী মিতালী এক্সপ্রেস।

এভিএস

এই সম্পর্কিত অন্যান্য খবর