মানিকনগরের খাল যেন এখানকার বাসিন্দাদের অযত্ন আর অবহেলারই সাক্ষী। একসময়ের প্রবহমান খালই এখন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে সবার জন্য। হয়ে উঠেছে মশার আবাসস্থল।
৩৮ বছর ধরে রাজধানীর মানিকনগরে এই খালের পাশে বাস করছেন চা দোকানদার রুহাব মিয়া। দোকানে মশার উপদ্রব এতো বেশি যে দিনের বেলা কয়েল দিয়েও ঠেকাতে পারছেন না মশা।
বুহাব মিয়া বলেন, 'সারাদিনই মশা, সন্ধ্যার পর আরও বেশি মশা। একটা কয়েলের দাম ৫ টাকা, দিনে দুইটা কয়েল দিলে ১০ টাকা যায়। মাসে ৩০০ টাকা যায়। এ টাকা পাব কোথায়। এক কাপ চা বিক্রি করে ২০ পয়সা লাভ হয়।'
দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় সব এলাকায় মশার উপদ্রব বাড়ে মৌসুম আসার আগেই। প্রতি বছর এই এলাকায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও থাকে বেশি। এলাকাবাসী জানান, বৃষ্টি হলেই বেড়ে যায় মশা। এরই মধ্যে অনেকেই আক্রান্ত হয়েছেন জ্বরে।
স্থানীয় একজন বলেন, 'বৃষ্টি হলে মশা বাড়ে। সারাদিনই আমাদের কয়েল জ্বালাতে হয়। রাতে তো মশারি ছাড়া ঘুমানো যায় না। মশার জন্য বাচ্চাদের জ্বর চুলকানি হয়ে যাচ্ছে।'
এই এলাকায় অধিকাংশ রাস্তার অবস্থাই বেহাল। তাই বৃষ্টি হলেই রাস্তার উপরের জমে থাকা পানিতেই বাড়ে মশার বিচরণ। তবে, উচ্চঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হলেও নেই কার্যকরী পদক্ষেপ, এমনটাই অভিযোগ এলাকাবাসীর।
সাত নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দায় চাপালেন সাধারণ মানুষের ওপর। বললেন, নিয়ম মেনে মশার ওষুধ ছিটানো হলেও সচেতনতার ঘাটতি থাকায় কমছে না মশার উপদ্রব।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সামছুল হুদা কাজল বলেন, 'ঢাকা সিটি কর্পোরেশন মেইন রাস্তাগুলো, নর্দমাগুলো পরিষ্কার করছে। বাড়ির গলির আবর্জনা তো জনগণের নিজেদের কর্তব্য পরিষ্কার করা। যা অবহেলা করে করা হয় না। এ অবহেলার জন্যই জিনিসগুলো বেশি বাড়ে।'
তবে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধির দাবি, মৌসুম শুরুর আগেই, আরও জোরালো কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা করছেন তারা, যাতে ভয়াবহ হতে না ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগের দাপট।