গত বছরের জুন-অক্টোবর পর্যন্ত চলা বর্ষা মৌসুমের চিত্র এটি। গ্রীষ্ম, বর্ষার এসময় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টি হয়। সহজে খাল, নালায় সড়কের জমে থাকা পানি নামতে পারে না। তৈরি হয় জলাবদ্ধতা।
টয়েনবি সার্কুলার রোড, আর কে মিশন, অভয়দাস, কে এম দাস লেন, গোপীবাগ, রামকৃষ্ণ মিশনসহ বেশ কিছু এলাকার বাসিন্দাদের কাছে ভোগান্তির এ চিত্র বেশ পরিচিত।
নতুন বছরের শুরুতে এসব এলাকায় গিয়ে দেখা মিললো খানাখন্দের, আর নির্মাণ উপকরণ পড়ে ভরে আছে ড্রেন, সুয়ারেজের লাইন বন্ধ অতিরিক্ত আর্বজনায়। এরমধ্যে বসবাস নাগরিকের। ব্যস্ততম এলাকা টিকাটুলির অবস্থা দেখে মনে হবে আলোর নিচেই অন্ধকার। এ কারণে বাসিন্দারা পড়েছেন বিপাকে। বাড়ছে রোগবালাই ও মশার উপদ্রব।
বাসিন্দারা বলছেন, গতবছরের চেয়ে এবছর ড্রেনেজ ব্যবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। ওয়াসা ও সিটি করপোরেশন একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছেন। যে কারণে ভোগান্তি থেকে রেহাই মিলছে না।
বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘প্রত্যেকটা সুয়ারেজ লাইনের মুখ বন্ধ হয়ে গিয়েছে মেইন রাস্তা থেকে। যার ফলে পানি রাস্তা থেকে বাসার যে পানির ট্যাংকি থাকে সেখানে সুয়ারেজের পানি প্রবেশ করেছে।’
দোকানদারদের একজন বলেন, ‘কাস্টমার তো পানির মধ্যে আসেই না। ময়লা পানির মধ্যে কেউ আসবে নাকি কিছু কিনতে।’
এদিকে নগর পরিকল্পনাবিদ বলছেন, সুয়ারেজ লাইনের পানি সরাতে মহল্লার ড্রেনেজ ব্যবস্থার ওপর মনোযোগ বাড়াতে হবে। সিটি করপোরেশন ও সেবা সংস্থাগুলো বড় প্রকল্প নিয়ে না ভেবে খালের আন্তঃসংযোগ বাড়ালে ভোগান্তি কমবে।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স বা নগর-পরিকল্পনাবিদ সভাপতি অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘শিরা-উপশিরার মতো যেসব খাল ছিল সেসব খাল আমরা গরা টিপে মেরে ফেলেছি। যার ফলে বৃষ্টির পানি নামতে পারে না। এখন কি করছি হাজার কোটি টাকার ড্রেনেজ প্রকল্প নিয়ে আসছি। এতে তো আমাদের সমস্যা সমাধান হবে না। এখন আমাদের যেসব খাল আছে তার প্রতিটা ইঞ্চি রক্ষা করতে হবে।’
আর ঢাকা দক্ষিণ সিটির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা বলছেন, ১৩টি খাল খননের কাজ চলছে।
তিনি বলেন, বর্ষার আগেই ড্রেনের ডিপ ক্লিনিংয়ের কাজ শেষ হবে।
ডিএসসিসি প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. মাহাবুবুর রহমান তালুকদার বলেন, এখানকার যেসব খাল আছে তার প্রত্যেকটা খালের বর্ষার আগে যে ড্রেনেজ পরিষ্কার ও খাল পরিষ্কার করা হয় তার সবগুলোর ট্রেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে। আমি থাকা অবস্থায় এগুলোতে সাইন হবে না যতখন না পর্যন্ত ঠিকঠাক কাজ হয়।
ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনতে খোলা ড্রেন রয়েছে ৪৬৬.৪৩ কিলোমিটার। আর পাইপ ড্রেন রয়েছে ৭১৫.৭৩ কিলোমটিার।