পুনর্নির্মাণের জন্য প্রায় এক বছর আগে ভেঙ্গে ফেলা হয় জরাজীর্ণ ফতেহ আলী সেতু। কিন্তু বানানো হয়নি বিকল্প কোন সড়ক। তাই পূর্ব ও পশ্চিম বগুড়ার মধ্যে যোগাযোগের ভরসা এখন নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো।
এতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন বগুড়ার গাবতলী, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা উপজেলাসহ পূর্ব বগুড়ার লাখো মানুষ।
স্থানীয়রা বলেন, 'এই ব্রিজটার জন্য পূর্ব অঞ্চলের চারটি উপজেলার মানুষ কি যে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। খুবই ধীর গতিতে কাজ চলছে। কন্টাক্টর সাহেব মনে হয় ঠিক মতো কাজ করছে না।'
আরেকজন বলেন, 'চলাফেরা করতে খুব অসুবিধা হচ্ছে। বাঁশের ব্রিজ কখন কি হয়।'
করতোয়া নদীর ওপরে সরু ও জরাজীর্ণ ফতেহ আলী সেতু ভেঙ্গে ফেলার পর প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ শুরুর পর আশায় বুক বাঁধলেও সে আশায় গুঁড়েবালি। কাজের মেয়াদ পূর্তির চার মাস বাকি থাকলেও ৬৯ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সেতুর কাজ হয়েছে মাত্র ৩০ শতাংশ। ফলে সেতুর একপাড়ে চাষি বাজার আর অপর প্রান্তে ফতেহ আলী ও রাজাবাজারের ব্যবসা-বাণিজ্য লাটে ওঠার দশা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, 'আমাদের এখানে যে বাজারগুলো রয়েছে এখানে মালামাল অনেক ঘুরে আনতে হচ্ছে। ব্রিজের ধীর গতির কারণে আমাদের যারা বাজারে ব্যবসায়ী আছি তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।'
আরেকজন বলেন, 'গত বছরের তুলনায় এবার ২০ শতাংশ ব্যবস্যা নেই। খুব খারাপ অবস্থা হয়ে গেছে আমাদের।'
সেতুটির মোট ৬০টি পাইলের মাত্র ৩৮টি পাইলের কাজ শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। যার ৭০ শতাংশ কাজই এখনো বাকি। কবে কখন এই দুর্ভোগ নামক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি মিলবে এমন প্রশ্ন ছিলো সড়ক বিভাগের কাছে। অজুহাতের যেন শেষ নেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি রাজু আহমেদ বলনে, 'বর্ষার আগেই কয়েকটার বেজ করতে পারবো। আর কিছু পারমিশনের জন্য ডিসি স্যারের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।'
বগুড়ার সড়ক বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান বলেন, 'সেতুর পাইল নির্মাণের যে জটিলতা এইটা আইডেন্টিফাই করতে কিছুটা দেরি হয়। সব মিলিয়ে আমরা পাইলের কাজ শুরু করতে পেরেছি গত অক্টোবর-নভেম্বর মাসের দিকে। আমাদের ফতেহ আলীর দিকে কিছু ভূমি অধিগ্রহণের কাজ বাকি আছে। আমরা ভূমির পজিশন পেয়েছি কিন্তু এখনো উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়নি। আশা করছি এই ডিসেম্বরের মধ্যে ব্রিজের কাজ শেষ করতে পারবো।'
দ্রুত ফতেহ আলী সেতুর পশ্চিম প্রান্ত লাগোয়া স্থাপনা অপসারণ করা সম্ভব না হলে আসছে বর্ষাকালটা আরও বিলম্বের কারণ হতে পারে ধারণা এলাকাবাসীর।