দেশে এখন
0

অনুন্নত যোগাযোগ ও সুতার দাম বৃদ্ধিতে চ্যালেঞ্জে বরগুনার তাঁতশিল্প

বরগুনার তালতলীর ১৩টি পাড়ায় এখনো ভোর হয় হস্তচালিত তাঁতের খটখট শব্দে। সেখানকার অনেক রাখাইন নারী এ শিল্পের ওপর নির্ভরশীল হলেও নানা প্রতিবন্ধকতায় আলোর মুখ দেখছে না রাখাইনদের তাঁতবস্ত্র।

প্রায় তিনশ' বছর আগে মিয়ানমারের আরাকান থেকে তৎকালীন বঙ্গদেশে আসেন রাখাইনরা। এরপর বরগুনার তালতলীতে গড়ে তোলে বসতি। নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে শুরু করেন তাঁত বস্ত্র বোনার কাজ। তবে, কালের পরিক্রমায় এসব তাঁতবস্ত্র এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে পর্যটকদের মাধ্যমে দেশ ও বিদেশে সমাদৃত।

মূলত রাখাইন নারীরাই এ পেশায় জড়িত। তালতলীর অন্তত ৮টি এলাকায় রয়েছে শতাধিক হস্তচালিত তাঁত। যেখানে তৈরি হচ্ছে ফতুয়া, শার্ট, ভ্যানিটি ব্যাগ, লুঙ্গি, চাদরসহ বাহারি তাঁতবস্ত্র। শীতে চাহিদা বাড়ায় মানভেদে প্রতিটি পোশাক বিক্রি হয় ৩শ থেকে ২হাজার টাকায়।

বৈচিত্র্যপূর্ণ এসব পোশাকের বাণিজ্যিক কদর থাকলেও অনুন্নত যোগাযোগ, সুতার দাম বৃদ্ধিসহ নানা জটিলতায় আশানুরূপ সুফল পাচ্ছেন না তাঁতিরা। তাই পেশা বদলাচ্ছেন অনেকে। এমন অবস্থায় রাখাইন তাঁতশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উদ্যোক্তাদের।

স্থানীয়রা জানান, পর্যটকরা তাদের এ তাঁতের জিনিস পছন্দ করেন। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে আরও পর্যটক আসবেন এবং এই ঐতিহ্যটাকে ধরে রাখা যাবে।

এদিকে শিল্পটি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে রাখাইনদের উন্নত প্রশিক্ষণসহ নানা পদক্ষেপের কথা জানান বরগুনা জেলার বিসিকের উপ-ব্যবস্থাপক কাজী তোফাজ্জেল হক।

'আমরা সবসময়ই তালতলীর তাঁতি সম্প্রদায়ের পাশে আছি। তাদের পণ্য বিপণন থেকে শুরু করে কাঁচামালের যোগান, মূলধন সরবরাহ সবকিছুতে বিসিক জেলা কার্যালয় বরগুনা তাদের পাশে থাকবে।'

তিনশ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পের মাধ্যমে এ অঞ্চলে টিকে আছে রাখাইন পরিবারগুলো। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে তাঁতশিল্পকে টিকিয়ে রাখার আহ্বান সংশ্লিষ্টদের।