নামে কিংবা গোত্রে দামি অথবা অভিজাত নয়, তবে বিলুপ্তপ্রায় কিংবা অনেকটাই অচেনা শিমুল ফুল।
সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীর নিকটবর্তী মানিগাঁও গ্রাম। এখানে এলে অবশ্য মনে হয় না, দিনে দিনে সংখ্যায় কমেছে শিমুলেরা। ১০০ বিঘারও বেশি জায়গা জুড়ে ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে তোলা হয়েছে বাগান।
২০০২ সালে ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীন নিজের প্রায় ২ হাজার ৪০০ শতক জমিতে শখ করে প্রায় তিন হাজার শিমুল গাছ রোপণের উদ্যোগ নেন। সেখানে এখন তৈরি হয়েছে বাগান।
এসময়ে সৌন্দর্যের ডালি নিয়ে আসে ফুলগুলো। রক্তরাঙা সৌন্দর্য দেখতে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে দর্শনার্থীরা হাজির হন শিমুল বাগানে।
খাবারের যোগান থাকায় আসে হরেক রকম পাখি। পর্যটক আর পাখপাখালি মিলে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো বাগান। শুধু চোখে দেখে নয়, দৃশ্যগুলো ক্যামেরাবন্দি করে নিয়ে যান অনেকে।
ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, 'যে দিকে তাকায় রঙে রঙে ভরা।'
'এখানকার অভিজ্ঞতা একটু অন্যরকম। নাম শুনেছি শিমুল বাগানের, অনেক সুন্দর এক সঙ্গে অনেক ফুল ফুটে।'
'এইটা দেখার স্বপ্ন বা আমার চোখ দুটো আজকে দারুণ তৃপ্ত।'
'ঋতুরাজ বসন্তকে উপভোগ করতে চান তাহলে অবশ্যই শিমুল বাগানে আসবেন।'
শিমুল গাছগুলো এনে দিয়েছে ব্যবসা-বাণিজ্যের বেশ কিছু সুযোগ। জনপ্রতি প্রবেশ ফি ২০ টাকা। পাশাপাশি বেড়েছে পেশাদার ফটোগ্রাফারদের ব্যস্ততাও। ঝরা ফুল কুড়িয়ে মালা গেঁথে বিক্রি করেন অনেকে। কর্মসংস্থান হয়েছে তেমনি বেচাকেনা বেড়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও। এতে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন তারা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, 'বসন্তকালে পর্যটকের সংখ্যা বেশি। দৈনিক ১০-১৫ হাজার দর্শনার্থী বাগান দেখতে আসেন। ছুটির দিনে যা আরেকটু বেশি।'
বাগানের স্বত্বাধিকারী বলেন, পর্যটকের কথা মাথায় রেখে বাগানকে সুসজ্জিত করা হয়েছে। দর্শনার্থীরা যেন আরও নিরিবিলিতে সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন, তাই রয়েছে রিসোর্ট করার পরিকল্পনা ।
বাগান মালিক রাকাব উদ্দিন বলেন, 'বিভিন্ন দূরদুরান্ত থেকে দর্শনার্থী আসে বলে বাড়ছে স্থানীয় কর্মসংস্থান।'
তিন হাজার শিমুল গাছের মধ্যে এ বছর প্রায় আড়াই হাজার গাছে ফুল ফুটেছে। চলতি মৌসুমে এই বাগানকে ঘিরে কোটি টাকার বেশি বাণিজ্যের আশা বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীদের।