ভ্রমণ পিপাসুদের অপলক দৃষ্টি আটকে যায় শতবর্ষী মসজিদের নিখুঁত কারুকাজে। সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি কারুকাজ ও চারুলিপি খঁচিত এ মসজিদে ব্যবহার হয়নি কোন লোহা।
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার মমিন মসজিদ দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র কাঠের তৈরি শিল্পসমৃদ্ধ দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য। ১৬ হাত লম্বা, ১২ হাত চওড়া আর ১৫ হাত উচ্চতার মসজিদটি সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয় ২০০৩ সালে। শাল, সেগুন ও লোহাকাঠ দিয়ে তৈরি এ মসজিদটির নির্মাণশৈলী দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন পর্যটকরা।
পর্যটকদের মধ্যে একজন বলেন, ‘অনেক শিক্ষার্থীরা এখানে ঘুরতে আসে, ছবি তোলে, ভিডিও ধারণ করে। কারণ এশিয়ার মধ্য এটা প্রথম মসজিদ যেটা সম্পূর্ণ কাঠের তৈরি।’
আরেকজন বলেন, ‘ এটা আমাদের কাছে খুবই আশ্চর্যের যে এত বছরের পুরোনো একটা কাঠের মসজিদ কীভাবে এত বছর যাবৎ টিকে আছে।’
নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মসজিদটির কারুকাজ ও রঙয়ের ক্ষতি হয়েছে বিগত দুই দশকে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় আশানুরূপ উন্নয়ন নেই পর্যটক সম্ভাবনার।
একজন পর্যটক বলেন, ‘দূর-দূরান্ত থেকে, দেশ এবং দেশের বাইরে থেকেও অনেক পর্যটক এই মসজিদ দেখতে আসে। পর্যটন সম্ভাবনাময় এই জায়গাটি এখন যে অবস্থায় রয়েছে, সেটা সংস্কার করা অতি জরুরি।’
পিরোজপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি রেজাউল ইসলাম শামীম বলেন, ‘এই মসজিদটি ধর্মীয় দিক থেকে গুরুত্ব বহন করে। এটিকে সংস্কার করে কীভাবে আরো পর্যটক বৃদ্ধি পায় সেদিকে সরকারের নজর দিতে হবে।’
তবে মসজিদটির সংস্কার ও রাস্তা সংস্কারসহ নানা পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানান জেলা প্রশাসক।
পিরোজপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বলেন, ‘এটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষনার জন্য ইতোমধ্যেই আমরা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরকে পত্র প্রেরণ করেছি। আশা করছি শীঘ্রই এটির কাজ বাস্তবায়িত হবে।’
তিনি বলেন, ‘ স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাস্তার সংস্কারের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে ইতোমধ্যেই।’
মমিন উদ্দীন আকনের দিক-নির্দেশনায় ২১ জন কাঠ-খোদাই মিস্ত্রি ১৯১৩ সালে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। যা শেষ হয় ১৯২০ সালে।