অর্থনীতি
দেশে এখন
0

মধ্যবিত্তের ধরাছোঁয়ার বাইরে ফ্ল্যাটের দাম

রাজধানীতে জমানো টাকায় পরিকল্পনার বাজেটে আর মিলছে না ফ্ল্যাট। এজন্য নির্মাণসামগ্রীর চড়া দামকেই কারণ হিসেবে বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

নির্মাণ শিল্পীর স্বপ্ন পূরণের আঁচড়। শ্রমে-ঘামে দেয়া এই আঁচড়ে তিল তিল করে স্বপ্নের আবাসন পূর্ণতা পায়। আবাসন নির্মাণের সিভিল ১৬২টি খরচের বছর ব্যবধানে বেড়েছে সবগুলোই। বর্গফুট প্রতি স্থান ভেদে বেড়েছে ২৭০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত।

নির্মাণাধীন এক বাড়ির মালিক বলেন, ‘এখন নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে গেছে। এ কারণে মানুষ ফ্ল্যাটের কাজ করাতে পারছে না। যাদের আগে জায়গা কেনা আছে তারাই ফ্ল্যাটের কাজ করাচ্ছেন। প্রতি ইউনিটে আমাদের ব্যয় ধরা ছিল ৩৮ লাখ টাকা কিন্তু এখন ৫০ লাখ টাকায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে।’

যৌথ মালিকানায় নিজেদের বাড়ি বানাচ্ছেন এই সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার। সিভিল কাজে বর্গফুট প্রতি ২৫শ’ টাকা খরচের হিসেব করে কাজ শুরু করেছিলেন। সেই হিসেবের সাথে এখন আর বাস্তবতার মিল খুঁজে পাচ্ছেন না। কারণ নির্মাণসামগ্রীর প্রতিটি পণ্যের দাম বেড়েছে। তাই বাধ্য হয়েই তাদের বাড়তি মূল্য গুণতে হচ্ছে।

চলছে নির্মাণ মৌসুম, অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর নির্মাণে ভাটা পড়েছে। একদিকে মূল্যস্ফীতির চাপ অন্যদিকে নির্মাণসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি। দূর্গাপুর ও সিলেটের লাল বালি বর্গফুট প্রতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ থেকে ৬৫ টাকা পর্যন্ত। আর ইট মানভেদে ১২ থেকে ১৪ টাকা ও পাথর ১৮০ থেকে ২২০ টাকা পর্যন্ত। রড টন প্রতি লাখের ঘর ছুঁই ছুঁই করছে। এছাড়া সিমেন্টের দামও বেড়েছে।

শুধু সিভিল ওয়ার্ক নয় স্যানিটারি আইটেমের দামও আগের তুলনায় ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি রং ও বিদ্যুৎ সংযোগ সামগ্রীর দামের প্রভাব ফ্ল্যাটের দাম নির্ধারণে পড়েছে।

রিহ্যাবের সাবেক সহ-সভাপতি লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, ‘রড, বালি, সিমেন্টসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে। আর বাইরে যদি ১ শতাংশ বাড়ে আমাদের এখানে ৩ শতাংশ বেড়ে যায়। সবমিলিয়ে নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় আমাদের ব্যবসাও ভালো হচ্ছে না।’

বাজারে ফ্ল্যাট ব্রোকার হিসেবে বি প্রোপার্টির পরিচিতি রয়েছে। তাদের বাজার বিশ্লেষণ বলছে, মৌসুমভিত্তিক বাজারে ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকার ফ্ল্যাটের চাহিদা রয়েছে।

বি প্রোপার্টির মহাব্যবস্থাপক (মার্কেটিং অ্যান্ড গ্রোথ) খান তানজিল আহমেদ বলেন, বছর দুয়েক আগে যে ফ্ল্যাটের দাম ৬০ লাখ টাকা ছিল এখন সেই ফ্ল্যাটের দাম ৮০ লাখ কিংবা তারও বেশি। জাতীয় নির্বাচনের আগে ফ্ল্যাটের চাহিদা কম থাকলেও এখন কিছুটা বেড়েছে।

মূল্যস্ফীতির বাজারে আয়-ব্যায়ের হিসেব মেলাতেই হিমশিম খাচ্ছে মানুষ। তাই বাড়ি অথবা ফ্ল্যাট নির্মাণের আগে খরচের সঠিক হিসেব করে কাজে হাত দেয়ার পরামর্শ খাত সংশ্লিষ্টদের।