নাটোর শহরতলীর দিয়ারভিটা বিলের চারপাশ শীতকালে অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত হয়ে উঠে।
ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখির এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য মন কাড়ছে পাখিপ্রেমীদের। পাতি, বালি হাঁস, পানকৌড়ি, শামুকখোলসহ অন্তত ১০ প্রজাতির পাখির আগমন বিলটিতে। সেজন্য বিকেল হলেই বিল পারে ছুটে যান পাখিপ্রেমীরা। মুঠোফোনে বন্দী করেন পাখির নানা দৃশ্য।
একজন দর্শক বলেন, 'একসাথে এতো পাখি কখনও দেখিনি। পাখিগুলো দেখে অনেক ভালো লাগে। রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় আমি একেবারে চলে যাই না। একবার হলেও দাঁড়িয়ে পাখি দেখি।'
নাটোর জেলায় রয়েছে ছোট বড় অন্তত ২৭টি বিল। বর্ষাকাল শেষ হওয়ার পর এসব বিলে থাকে অল্প পরিমাণ পানি। মাছ খাওয়ার পাশাপাশি শীত থেকে বাঁচতে অক্টোবরের শেষ সময়ে দল বেঁধে আসতে শুরু করে অতিথি পাখিরা। সারাদিন খাবার জোগাড়ের পর আশ্রয় নেয় বিলের আশপাশের গাছগুলোতে। তবে এই সুযোগ নিয়ে পাখি শিকারে মেতে উঠেন একদল অসাধু শিকারী।
স্থানীয় একজন বলেন, 'আগে জাহাঙ্গীরনগরে গিয়ে পাখি দেখতে হতো। কিন্তু এখন নিজের এলাকায় এতো পাখি দেখে অনেক ভালো লাগছে। স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন এ পাখিগুলো যেন সংরক্ষণ করা হয়।'
পরিবেশ কর্মীরা বলছে, নজরদারি না থাকায় রাতের আঁধারে পাখি শিকার করছে অসাধু শিকারীরা। পাশাপাশি অতিথি পাখি জবাই করে পাচার করা হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। এজন্য পাখি শিকার বন্ধে কঠোর প্রদক্ষেপ নেয়ার দাবি সংগঠনের নেতাদের।
চলনবিল জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, 'কয়েকটি জায়গায় অভিযান করেছি, বিশেষ করে চলন বিলের মূলঘাঁটি তিশিকান্দি মাজার এলাকা এবং হুলহুলিয়া বিলে ভোর ৬ টায় গিয়ে পাখি শিকারিদের ধরেছি। তাদের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি এখানে রাত ১টায় পাখি কেনাবেচা হয়।'
পাখি শিকার বন্ধের পাশাপাশি প্রশাসনের নিয়মতি অভিযানে পাচার ঠেকাতে না পারলে হুমকির মুখে পড়বে জীববৈচিত্র্য। এজন্য স্থানীয়দের পাশাপাশি প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন পরিবেশ কর্মীরা।