ক্রেতারা জানান নানা কারণে তাদের ঝোঁক আধুনিক বস্ত্রের দিকে। লেপের তুলনায় কম্বল রাখতে অল্প জায়গার প্রয়োজন পড়ে ৷ এছাড়া হালকা হওয়ায় পরিবহন সহজ। ধুয়ে ব্যবহার করা যায় বলে অনেকে পছন্দ করেন। তোষকের বদলে ম্যাট্রেসে খরচের পরিমাণ বাড়লেও সুবিধাজনক হওয়ায় চাহিদা বাড়ছে।
বিক্রেতারা বলেন, 'আগে লেপ ভালো চললেও এখন কম্বল খুব ভালো চলে। যাদের ডাস্ট এলার্জি আছে তারা লেপ কিনছে না। হালকা তাই বহন করতে সুবিধা। একটা লেপ বানাতে গেলে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা লাগে। আর কম্বল সবার ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আছে।'
বাহারি পণ্যের দাপটে লেপ-তোষকের কদর কমেছে। বরিশাল নগরীতে এগুলো তৈরির শতাধিক কারিগর রয়েছেন। আগে দৈনিক ৮–১০ টি লেপ-তোষক তৈরি করলেও বর্তমানে চাহিদা কম থাকায় তৈরি হয় কেবল ২ থেকে ৩ টি। গত মৌসুমে দৈনিক ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা আয় হলেও এবার উপার্জন ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা।
লেপ তৈরিকারকরা বলেন, 'আগে ১৫ টা লেপ বানাইতাম এর এখন ৭ থেকে ৮টা বানাই। বাজারে ম্যাট্রেস আর কম্বল বাইর হওয়াতে আমাদের ব্যবসা নাই বললেও চলে। গতবছরগুলো চেয়ে এই বছরই সবচেয়ে কাজের চাপ কম। এবার কাজ একদমই নাই।'
এদিকে এবার লেপ তৈরিতে কাপড় এবং তুলার দামও বেড়েছে। সাদা সুপার তুলা প্রতি কেজি ১৩০ টাকা, সাদা উল ১৫০, আটি তুলা ৩০০ -৬০০, সি পল বা এস বি তুলা ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিকল্প পণ্যের দাপট ও তৈরিমূল্য বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের কাছে ঐতিহ্যবাহী লেপ-তোষক-জাজিম গুরুত্ব হারাচ্ছে।
চকবাজার, পদ্মাবতী, কাটপট্টিসহ নগরী জুড়ে রয়েছে প্রায় ৩৫ টি দোকান। নতুন পূরণো সব মিলিয়ে মৌসুমে ৩ থেকে ৪ কোটি টাকার পণ্য বেচাকেনার আশা ব্যবসায়ীদের।
চকবাজার লাইন রোড মালিক সমিতির প্রচার সম্পাদক মো. মাহাবুব ইসলাম বলেন, 'শীত মৌসুমে আমাদের মূল ব্যবসাটা হলো লেপ-তোষকের। কিন্তু কালের বির্বতনে আধুনিকতার কারণে এখন লেপের পরিবর্তে কম্ফোটার বিক্রি হচ্ছে।'
ব্যবসায়ীরা জানান, ৪ /৫ হাতের এক একটি লেপ তৈরিতে খরচ পড়ছে ২২০০ – ২৩০০ টাকা, সাড়ে ৪- সাড়ে ৫ হাত লেপ ২৫০০ টাকা, ৫/৬ হাতের লেপ তৈরিতে খরচ পড়ছে ২৮০০ টাকা। অন্যদিকে কম্ফোটার আকার ও প্রকারভেদে ২২০০ থেকে ৪২০০ টাকা, কম্বল ৩২০০ থেকে ৬৫০০ টাকা আর ম্যাট্রেস মিলছে ২০০০ টাকা থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত।